‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার বিজেপির’
১০ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৪৪ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৪৫
ঢাকা: বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হয়েছে, সে কারণেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি আওয়ামী লীগের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির আমন্ত্রণে সফর শেষে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নেতারা।
ভারত সফরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে হাছান মাহমুদও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। ভারত সফরে অন্যান্য সদস্য হলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যারোমা দত্ত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম এবং উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দিল্লিতে দুইদিন থেকে আমার যেটি মনে হয়েছে দুই দেশের আন্ডারস্ট্যান্ডিং এতো গভীরে, এমন উচ্চতায় গিয়েছে আমার অকল্পনীয় লেগেছে। তারা প্রতিটি ক্ষেত্রেই আন্তরিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ।’
আগামী দিনে উন্নয়ন ও বাণিজ্য সহায়তা ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ সবকিছু মিলে আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা এটা খুবই ভালো পর্যায়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মূলত সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আপনারা জানেন যে চার মাসের মাথায় বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ভারতের ক্ষমতাসীন জনতা পার্টির আমন্ত্রণে সফর করে। এই সফরে ভারতের যে সমস্ত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করেছি তাদের অভিমত হচ্ছে, বাংলাদেশে আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, এটি অভাবনীয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হয়েছে সেই কারণেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য আমরা একযোগে কাজ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বলেছি, অতীতে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছিল, যেটি ছিল ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে দেওয়ার জন্য। কক্সবাজারে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল, সেটিও ছিল ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে দেওয়ার জন্য। এই বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে এবং সেই দিনগুলো তাদের জন্য উদ্বেগের ছিল সেটি তারা জানিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। এ বিষয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সব মিলিয়ে এই সফরে প্রমাণিত হয়েছে দুই দেশের সম্পর্ক এমন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে যা অন্য কারও সঙ্গে তুলনীয় নয়। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের শান্তি স্থিতি, শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতি এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমন করার জন্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অব্যাহতভাবে রাখার জন্য আমাদের সরকার কাজ করেছে। তাতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এটি যেন অব্যাহত থাকে এ ব্যাপারে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেছে।’
৬ আগস্ট তিন দিনের সফরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটি ভারতের সরকার ও বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে মিলিত হন। সরকারের অন্যদের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্ককের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি জে পি নাড্ডাসহ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক হয়।
গত ২০ জুলাই প্রতিনিধি দলটির সফরে যাওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে ২৯ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সময়সূচি ফাঁকা না পাওয়ায় সফর পুনরায় পেছানো হয়।
সারাবাংলা/এনআর/একে