Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বন্যার আশঙ্কা কেটে গেছে পাহাড়ে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ আগস্ট ২০২৩ ১৭:০৮ | আপডেট: ৯ আগস্ট ২০২৩ ১৮:১০

ড. এনামুর রহমান, ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের অন্তত ৫ জেলা পানির নিচে চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হলেও পাহাড় ধস ও ঘর চাপা পড়ে পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার ( ৯ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, যেহেতু বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে, পানিও কমতে শুরু করেছে। সেহেতু নতুন করে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে পানিবন্দি মানুষের জন্য খাবার পৌঁছে গেছে।

তিনি জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগড়া উপজেলা, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া এবং বান্দরবানের রামু, রাঙামাটি ও খাগরাছড়ির কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মাঠ প্রশাসন ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা উদ্ধার কাজ এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দুর্গত এলাকার জনগণকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন এবং মানবিক কার্যক্রম চলমান আছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ২ হাজার মেট্রিক টন শুকনো খাবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি উন্নতির দিকে হলেও অনেক বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেশি সহায়তার দাবি করা হয়েছে। আজও ১০ লাখ টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়ে পাঠিয়েছি। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত ৫ জেলার জন্য মোট ৭০ লাখ টাকা, ২১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৭০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। একইসঙ্গে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলয়েট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও টেলিফোনে আমাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন। তিনি সহায়তা বাড়ানোর দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১১ আগস্ট চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার লোহাগড়া কক্সবাজারের চকরিয়ার পেকুয়া বান্দরবানের রুমা উপজেলা পরিদর্শনে যাব।’

পাহাড় ধ্বস সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাহাড় ধসে ২০১৭ সালে দেড়শোর বেশি মানুষ মারা গেছেন। এরপরে কিন্তু পাহাড় ধস হয়েছে কিন্তু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মা ও মেয়ে দুইজন এবং পেকুয়া উপজেলায় মাটির ঘর ধসে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি আইন করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসকদের কাছে একটা নির্দেশনা দেওয়া আছে, যেন পাহাড়ের ঢালে কেউ বসতি করতে না পারে। তারপরেও অবৈধভাবে অনেকেই বসবাস করে। সরকারিভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হয় এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এবারও বৃষ্টিপাত দেখেই পাহাড়ি অঞ্চলের লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে রাঙামাটি, বান্দরবান, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। রাঙামাটিতে ২৩৫টি স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে কিন্তু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটার জন্য আমরা দুঃখিত। সেখানেও যাতে পাহাড় না ধসে, সেজন্য গাইডওয়াল তৈরি করা হচ্ছে।’

সারাবাংলা/জেআর/এনএস

ড. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর