Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্লগার নিলয় হত্যা: ৭ বছরেরও শেষ হয়নি বিচার

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৭ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৫৫

ঢাকা: ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর পূর্ব গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে আট নম্বর সড়কে নিজ বাসায় খুন হন নিলয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাত বছর পার হলেও এখনও বিচার শেষ হয়নি। কবে নাগাদ বিচার শেষ হবে তাও বলছে পারছে না সংশ্লিষ্টরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, সাক্ষীরা যদি নিয়মিত আদালতে আসেন তাহলে মামলার বিচার দ্রুত শেষ হবে।

বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। গত বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত। ওই দিন নিলয়ের স্ত্রী আশামনি সাক্ষ্য দেন। এরপর এক বছরে আর কোনো সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা যায়নি। আদালত কয়েকজন সাক্ষীদের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিও করেন। তারপরও পুলিশ সাক্ষীদের হাজির করতে পারেনি। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুস সাত্তার দুলাল বলেন, ‘মামলাটির অভিযোগ গঠন হয়ে গেছে। এখন সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। সাক্ষীরা যদি নিয়মিত আদালতে আসেন তাহলে মামলার বিচার দ্রুত শেষ হবে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সাক্ষীদের হাজির করে মামলার বিচার শেষ করতে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চেষ্টা করব ভিকটিমের পরিবার যেন নায়বিচার পায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটিতে একজনের সাক্ষ্য হয়েছে। এরপর থেকে অপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে আদালত থেকে সমন পাঠানো হয়। কিন্তু সাক্ষীদের পুলিশ হাজির করতে পারে না। কেন সাক্ষী আসে না পুলিশ সেই বিষয়ে রিপোর্টও দেয় না। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ তাদের গ্রেফতার করে এনে সাক্ষ্য দিতে আদেশ দেয়া হয়েছে। সাক্ষীরা যদি নিয়মিত আদালতে আসেন তাহলে মামলার বিচার দ্রুত শেষ হবে।’

বিজ্ঞাপন

মামলার বাদী নিলয়ের স্ত্রী আশামনি বলেন, ‘এতদিন হয়ে গেল এখনও বিচার শেষ হলো না। নিলয় হত্যার বিচারের অপেক্ষায় আছি। মামলার বিচার হোক, কাঙ্ক্ষিত একটা বিচার হোক। শুধু নিলয় হত্যা মামলার নয়, অন্য ব্লগার হত্যা মামলারও বিচার হওয়া উচিত। তরতাজা মানুষগুলোকে কেমনে তারা হত্যা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম ২/১ বছরের মধ্যেই মামলাটির বিচার শেষ হবে। কিন্তু গত ৭ বছর হয়ে গেল। এতদিনেও মামলার বিচার শেষ হলো না। বিচার হলে তো আমরা শান্তি পাব, সেই আশায় আছি। বিচারের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু কবে নাগাদ বিচার শেষ হবে জানি না।’

২০২০ সালের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ১৩ জনকে আসামি করে চার্জশিট জমা দেন। এরপর গত বছর ১৮ জানুয়ারি ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালত।

চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন, মো. মাসুম রানা, সাদ আল নাহিয়ান, মো. কাওসার হোসেন খাঁন, মো. কামাল হোসেন সরদার, মাওলানা মুফতী আব্দুল গাফ্ফার, মো. মর্তুজা ফয়সলে সাব্বির, অ মো. তারেকুল আলম ওরফে তারেক, খায়রুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাহাব, মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জুবায়ের।

আসামিদের মধ্যে মেজর জিয়া ও সাদ আল নাহিয়ান পলাতক রয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে আবু সিদ্দিক সোহেল আদালত থেকে পালিয়ে গেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর পূর্ব গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে আট নম্বর সড়কে নিজ বাসায় খুন হন নিলয়। চার যুবক বাসা ভাড়ার কথা বলে নিলয়ের বাসায় ঢুকে তার স্ত্রী আশামনিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর নিয়লের গলা ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আশামনি অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সারাবাংলা/এআই/একে

টপ নিউজ বিচার ব্লগার নিলয় হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর