‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক ও বেআইনি’
৩০ জুলাই ২০২৩ ১৪:২৭
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের টেনেট ফাইওন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা টেরি এল ইসলে বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক ও বেআইনি।’
রোববার (৩০ জুলাই) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি। টেরি এল ইসলে বলেন, ‘আপনাদের সংবিধান তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলাউ করে না। এটি করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। যদিও এটি ভালো আইডিয়া হয়ে থাকে, যদি তারা (ইসি) এটা করতেও চায়, তারা এটা করতে পারবে না। কারণ এটি করার কোনো আইনি কাঠামো নেই। এই মুহূর্তে এটা করা সম্ভব নয়।’
আমি আমেরিকা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করি না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দলের সদস্য হিসেবে আমরা মনে করি, এই সরকারের অধীনে কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে।’
আয়ারল্যান্ডের সিনিয়র সাংবাদিক নিক পল বলেন, ‘আমরা আশা করছি সংবিধান অনুযায়ী তারা (ইসি) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে।’
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের প্রস্ততি ও সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাচন সম্পর্কে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা জানতে চেয়েছে। আগামী নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসতে চাইছেন। এ বিষয়ে ইসির বিধিমালা জানতে চেয়েছেন। ইসি আশ্বস্ত করেছে পর্যবেক্ষকরা ভোটের আগে ও পরেও আসতে পারবে। কমিশন থেকে কোনো বাধা নেই।‘
তিনি বলেন, ‘প্রতিনিধিরা ঢাকা-১৭ আসনে হিরো আলমের উপরে হামলায় ইসি কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। কমিশন এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যারা হামলা করেছে তাদের গ্রেফতার ও পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ত‘ত্ত্বাবধায়ক সরকার যেহেতু অসাংবিধানিক, সেই বিষয়ে (প্রতিনিধি) ওনাদের কোনো আগ্রহ নাই। ওনারা বলেছেন সংবিধানে যেটা আছে সেইটার আলোকেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। কমিশনের যেই আইন আছে, সেটার যেনো সঠিক প্রয়োগ হয়। রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার যেনো ইসিকে সাপোর্ট দেয় এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করলে, এই কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এটা ওনারা আশা প্রকাশ করেছেন।’
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি সৌজন্য সাক্ষাত। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসবেন কি না, আসতে হলে তাদের কি করণীয় এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত আলোচনা হয়েছে যে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন কিভাবে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন আয়োজন করবে, কিভাবে কাজ করবে, অতি সম্প্রতি একটি সিটি করপোরেশন ও একটি সংসদের উপনির্বাচনে ছোটখাটো যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, বিশেষ করে প্রার্থীদের আক্রমণ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কি ব্যবস্থা নিয়েছে এই বিষয়গুলো তারা জানতে চেয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে যদি আসতে চায় তাহলে স্বাগত জানানো হবে। তবে অবশ্যই তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসতে হবে।’
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, ৪ নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি দলে জাপানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী ইউসুকি সুগু ও চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী এনডি লিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জিএস/এমও