ডিএমপিকে বিএনপির ধন্যবাদ
২৭ জুলাই ২০২৩ ২০:২৭
ঢাকা: ইতিবাচক ভূমিকার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশন (ডিএমপি)-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কয়েকমাস ধরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ধারাবাহিক কর্মসূচিতে সরকারের পক্ষ থেকে হামলা হলেও বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে কখনও সহিংস সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ায়নি। এরই ধারাবাহিকতায় দলের পক্ষ থেকে আজকে ২৭ জুলাইয়ের কর্মসূচি পরিবর্তন করে আগামীকাল শুক্রবার বন্ধের দিন দুপুর ২ টায় নয়াপল্টনে করার ঘোষণা দেওয়া হয়। আমরা মহাসমাবেশকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দলের নেতা-কর্মীরা অত্যান্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনা সহকারে শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবে। বিলম্বে হলেও আগামীকাল মহাসমাবেশে পুলিশ কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
‘আপনারা (পুলিশ প্রশাসন) আগামীকাল নয়াপল্টনস্থ বিএনপির মহাসমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ সহযোগিতা করবেন। আশা করি, সমাবেশে আসার পথে জনগণ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের কোনো বাধা প্রদান করা হবে না’- বলেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘দেশ আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের মানুষের জান-মাল, বিষয়-সম্পত্তি আজ চরমভাবে বিপন্ন। নারী, বৃদ্ধ, শিশুসহ কোনো বয়সের মানুষই নিরাপদ নয়। দেশের মানুষ আজ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। গণতন্ত্রের সর্বশেষ চিহ্নটি মুছে ফেলা হয়েছে কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের যাঁতাকলে। মধ্যম আয়ের মানুষরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি-জ্বালানি তেলসহ নিত্যব্যবহার্য জিনিস মানুষের ক্রয় ক্ষমতা থেকে দূরে চলে গেছে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এক দমবন্ধ করা পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের সামাজিক জীবন অস্থির হয়ে পড়েছে। এই রকম পরিস্থিতি আজ ১৫ বছর ধরে দেশে বিরাজমান। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার এক কঠিন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে চক্রান্তমূলক মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। স্বেচ্ছাতন্ত্র, উগ্র অহংকার ও একককর্তৃত্ব ইত্যাদি গণতন্ত্রের নীতিবিরোধী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জোর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে আন্দোলন এখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একদফা আন্দোলনে আজ সারা জাতি ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ জিয়ার নেতৃত্বেই এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে আসে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে। সুতরাং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল হিসেবে বিএনপি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে এসেছে। সুতরাং বারবার বিএনপির কর্মসূচির ওপর নৃশংস হামলা করার পরও বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে তার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এমনকি আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ও হোটেলে থেকে আটক করছে তারা। একটি কথা পরিষ্কার, বিএনপি কখনও অশান্তির রাজনীতি করে না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির দিক থেকে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা নেই এই মহাসমাবেশ নিয়ে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম করার ক্ষমতা রাখে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/একে