‘স্বাধীনতা ভালো তবে তাহা বালকের জন্য নয়’
১০ জুলাই ২০২৩ ১৪:০০ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ১৬:৪৫
ঢাকা: সাংবাদিক সমাজের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যত সমালোচনা করেন, সমালোচনা থেকে যদি কোথাও কোনো সংশোধনের ব্যাপার থাকে আমরা অবশ্যই সেটা করে নেব। আমরা করে (সংশোধন) নিয়ে থাকি। কিন্তু সাথে সাথে আপনাদেরও দায়িত্ব আছে, আপনারা স্বাধীনতা ভোগ করবেন, ওই যে একটা কথা আছে স্বাধীনতা ভালো তবে তাহা বালকের জন্য নয়; কেউ যেন বালক হয়ে না যায়।
সোমবার (১০ জুলাই) অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা ভাতা ও অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে অসুস্থ, অসচ্ছল সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলতে যা বোঝায় সেটা আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে সেই সুযোগটা আরও বেশি সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কথাগুলি বললে দেশের মানুষের বা আমরা স্বাধীন দেশ, সার্বভৌম দেশ আমরা কারো মুখাপেক্ষী না। আমরা কারো অধীনস্থ না। অন্যের কাছে খালি নালিশ করে নিজের দেশের বদনাম করা আর সংবাদ পরিবেশনের সময় অন্তত এমন কিছু পরিবেশন করবেন না; যেটা নিজের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। হ্যাঁ, কোথাও খারাপ দেখলে সেটা অবশ্যই আপনারা বলবেন। কিন্তু এমন কিছু না বলা, যাতে দেশের ভাবমূর্তিটা নষ্ট হয়।’
সেই দীর্ঘ ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই তো দেশটা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে বলেও এ বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজ বদলে যাবে, দিন বদলে যাবে, আমাদের হতাশার কিছু নেই। তবে আমি একটা অনুরোধ করেছি আপনারাও আপনাদের পক্ষ থেকে লিখবেন, যেন এক ইঞ্চি জমি কেউ অনাবাদি না রাখে। ছাদবাগান থেকে শুরু করে যার যার উৎপাদন করা, এভাবেই সবারই প্রবণতা থাকা উচিত। দেশের মানুষের যেন খাদ্যের অভাবটা কখনো না হয়। খাদ্যটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে রিজার্ভ নিয়ে কথা বলি। এই রিজার্ভের কথাটাও ওখান থেকে আসে।
আমাদের অন্তত তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো রিজার্ভ থাকতে হবে। জাতির পিতা যখন দেশ স্বাধীন করেছিলেন তখন তো কোনো রিজার্ভই ছিল না। তার মধ্যেও তিনি সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, বাঙালি সব পারে; এটা জাতির পিতা বলে গেছেন। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। কেউ বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবে না, যে যত কাজই করুক।’
এ সময় সাংবাদিক সমাজকে ২০০১ সাল থেকে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস নৈরাজ্যের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এটাই চাই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাটা যেন ব্যহত না হয়। যত সমালোচনা করেন আমরা অবশ্যই সমালোচনা থেকে যদি কোথাও কোনো সংশোধনের ব্যাপার থাকে আমরা সেটা করে নেব। আমরা করে নিয়ে থাকি। কিন্তু সাথে সাথে আপনাদেরও দায়িত্ব আছে, আপনারা স্বাধীনতা ভোগ করবেন, ওই যে একটা কথা আছে স্বাধীনতা ভালো তবে তাহা বালকের জন্য নয়; কেউ যেন বালক হয়ে না যায়। স্বাধীনতাটা ভোগ করবেন, সাথে সাথে দায়িত্ব বোধটাও থাকতে হবে, কর্তব্যবোধটা থাকতে হবে দেশ ও জাতির জন্য।’
‘সেই স্বাধীনতাই হচ্ছে মৌলিক স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতা শুধু নিজে ভোগ করবেন না। আপনার যেমন স্বাধীনতা আছে তেমনি সকলের সেই স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার আছে। কাজেই অধিকার আছে সকলেরই। অধিকারের সঙ্গে কিন্তু কর্তব্যবোধটাও থাকে সেটা যেন একটু থাকে। সেটা আমরা চাই।’
সারাবাংলা/এনআর/ইআ