বেড খালি নেই ন্যাশনাল মেডিকেলে, ভোগান্তিতে ডেঙ্গু রোগীরা
৯ জুলাই ২০২৩ ১৭:৩১ | আপডেট: ৯ জুলাই ২০২৩ ১৭:৪৫
ঢাকা: রাজধানীর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তির জন্য পর্যাপ্ত বেড খালি নেই। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে বেড খালি না থাকায় ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে এই হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যা ৪০ জন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ দিন ধরে ভর্তি আছেন মাসুদ। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কেউ চিকিৎসা পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছেন না। আমি ১৪ দিন ধরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছি। ১৪ দিনে আমার প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভর্তির পর থেকে একটা সুতাও ফ্রি পাইনি। নার্স/ ডাক্তারদের ডেকে পাওয়া যায় না। টাকা দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি তবও সময় মতো তাদের পাচ্ছি না। ডেঙ্গু ওয়ার্ড পরিস্কার করা হয় না। আমাদের যেসব আত্মীয় স্বজন আমাকে দেখতে এসেছেন তারাও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য কোনো প্রকার মশারীর ব্যবস্থাও নেই।’
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন নুরহজাহান নামে এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, ‘শুনেছি এটা আধাসরকারী হাসপাতাল, তবে কাজেকর্মে বেসরকারি। এন্টিবায়োটিক থেকে শুরু করে সব কিছু নিজেদের কিনতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে বিপদ থেকে বাঁচতে এসে আরও বিপদে পড়ে গেলাম। এতো খরচ! মধ্যবৃত্ত মানুষেরা কিভাবে এই হাসপাতালে জ্বরের চিকিৎসা নিবে সেটা মাথায় আসে না। চিকিৎসার জন্য নার্স/ডাক্তাদের ডাকলে অনেক সময় তারা খারাপ ব্যবহার করেন। অনেক চিকিৎসক আছেন ডেঙ্গু ওয়ার্ডে না ঢুকে বাইরে থেকে দেখেই চলে যান।’
ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স পপি খাতুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ের ছয়তলায় কোনো সিট খালি নেই। এসি-নন এসি সব জায়গায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। নতুন রোগী আসলে এই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই। অনেক রোগী থাকায় চিকিৎসকেরা অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে আমাদের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। সম্প্রতি আমাদের একজন ডাক্তার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে যতই রোগী হোক সবাই যেন সেবা পায় আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।’
ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ইনচার্জ মমতাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে ২২ জন শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে। শিশুদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা আছে। তবে রোগীর সংখ্যা বাড়লে আমাদের একটু কষ্ট হয়। এ কারণে সবাইকে সময় মতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এদিকে হাসপাতালের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নানান অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার। এছাড়াও একাধিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সারাবাংলা/এআই/ইআ