শিগগিরই কমছে না বৃষ্টি, অব্যাহত থাকতে পারে আরও ৭ দিন
১ জুলাই ২০২৩ ১৬:০৮ | আপডেট: ১ জুলাই ২০২৩ ১৭:২৯
ঢাকা: টানা ৪ দিন ধরে অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। গত দু’দিন সকালের দিকে আবহাওয়া শুষ্ক থাকলেও দুপুরের পর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, মৌসুমী বায়ু দেশের ওপরে সক্রিয়। যে কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমান যেমন বেশি, তেমনি স্থায়িত্বও বেশি।
আষাঢ় মাসে এই বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটি মৌসুমী বৃষ্টিপাত। টানা সাত কিংবা দশদিন ধরেও এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের সব স্থানে একই পরিমানে বৃষ্টি হয় না।
শনিবার (২ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে এবং পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে এসময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ বলছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের ওপরে যখন মৌসুমী বায়ু সক্রিয় বা মোটামুটি সক্রিয় থাকে তখন এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়। এখন বর্ষাকাল যে কারণে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। তবে সারাদেশে একই পরিমানে বৃষ্টি হবে না। কোথাও কমবে কোথাও বাড়বে। রাজধানী ঢাকাতেও রোববার কিছু সময় খরা তারপর আবার বৃষ্টি হতে পারে। ৪ জুন কিছুটা বৃষ্টি কম থাকলেও পরের দিন থেকে আবার বাড়তে পারে। আমরা দেখি মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপরে কয়টা রয়েছে। আমরা বাতাসের গতিবেগ পর্যবেক্ষণ করি। যদি বাতাসের গতিবেগ বেশি হয় তাহলে বঙ্গোপসাগর থেকে আর্দ্রতা বেশি আসে, ফলে বেশি বৃষ্টি হয়।’
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত সিলেটে ৯৯ মিলিমিটার। এছাড়া নিকলিতে ৯৩ মিলিমিটার, ঈশ্বরদিতে ৫০ মিলিমিটার, দিনাজপুরে ৬১ মিলিমিটার, রংপুরে ৪৫ মিলিমিটার, তেতুলিয়ায় ৫৫ মিলিমিটার, রাজারহাটে ৪৪ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ৭৪ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ৯০ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ৭৬ মিলিমিটার, ফেনীতে ৫৩ মিলিমিটার, মোংলায় ৫০ মিলিমিটার, যশোরে ৭৯ মিলিমিটার, ভোলায় ৬৭ মিলিমিটার উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এই বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের নদী বন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়- রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/এমও