বড় গরুর কদর কম, মাঝারি-ছোট গরু বিক্রি ২০/৩০ হাজার টাকা কমে
২৮ জুন ২০২৩ ২০:৩০ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ২৩:১৭
ঢাকা: জামালপুর থেকে আজ বুধবার (২৮ জুন) ১২ টি গরু নিয়ে এসেছেন ফারুক শেখ। মেরাদিয়া হাটের দশতলা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছোট একটি গরু হাতে। দাম চাচ্ছিলেন ৬৫ হাজার টাকা। একজন ক্রেতা এসে দাম বললেন চল্লিশ হাজার টাকা। কিন্তু এই দামে ছাড়বেন না ফারুক। ষাট হাজার টাকা দাম বলে দাঁড়িয়ে আছেন। এর কমে ছাড়বেন। সারাদিনে তিনটি গরু বিক্রি করেছেন যথাক্রমে ৮০ হাজার, ১ লাখ, ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এখন যে নয়টি গরু আছে, দামে না পোষালে ফেরত নিয়ে যাবেন।
এদিকে আজ গরুর দাম অর্ধেক পড়ে গেছে শুনে শেষদিনে হাটে এসেছেন তনু। পঞ্চাশ হাজারের নিচে গরু কিনতে চান। আশা করছেন পেয়ে যাবেন।
কুষ্টিয়ার মিরপুর থেকে গরুর খামারি আরিফ শনিবার ঢাকা আসছিলেন ১৫টি গরু নিয়ে। পাঁচটি গরু বিক্রি করেছেন যার সবগুলোই লাখের উপরে দাম। তার বিক্রি হওয়া সর্বনিম্ন গরুর দাম ছিল এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা আর সর্বোচ্চ এক লাখ নব্বই হাজার টাকা। জ লাখের গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় ছেড়ে দেবেন। এর নিচে বিক্রি করলে লস হবে তাই দরকার হলে বিক্রি না করেই ফেরত যাবেন।
জানালেন কুষ্টিয়া থেকে আসতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ফিরে যেতে লাগবে ৪০ হাজার। আপ ডাউনে লস হবে লাখ খানেক।
কুমিল্লার মেঘনা থেকে তিনটি গরু নিয়ে দশ হাজার টাকা খরচ করে মেরাদিয়া হাটে এসেছেন জহির। তিনটি গরুর দামই লাখের ওপর। কিছু কমে হলেও ছাড়বেন। ফেরত নিলে অনেক টাকা লোকসান হবে।
মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেল, বড় গরুর বাজার নেই। মাঝারি ও ছোট গরুর ক্রেতা আছে হাতে গোনা। বিক্রেতার হাকানো দাম থেকে অর্ধেক দাম বলছেন ক্রেতারা। এভাবে দামাদামি করে অন্তত তিরিশ হাজার টাকা কমে গরু কিনছেন তারা।
তবে মাথায় হাত চার থেকে পাচঁ লাখ টাকার বড় গরুর বিক্রেতাদের। হাটের শেষদিন ও অতিবৃষ্টির জন্য এখন ক্রেতা নাই বললেই চলে। জয়পুরহাট থেকে তিনদিন আগে বিরাট আকারের ফিজিয়ান গরু নিয়ে এসেছেন লুৎফর। ছয় লাখের গরু আজ পাঁচ লাখ পর্যন্ত দাম উঠেছে। অনেকে আড়াই লাখ পর্যন্ত বলছেন। কিন্তু এত কমে ছাড়বেন না লুৎফর। জানালেন আসতে খরচ হয়েছে পঁচিশ হাজার টাকা। দরকার হলে ফেরত যাবেন কিন্তু অত কমে গরু বিক্রি করবেন না। চার বছর ধরে গরুটি পালছিলেন তিনি।
মেরাদিয়া হাটের নয় নম্বর হাসিল ঘরের মজিবর জানালেন সারাদিন ৫০ টি গরু বিক্রি হয়েছে। একদিনের মধ্যে ২০-৩০ হাজার টাকা দাম কমে গেছে। ১ লাখের গরু ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বৃষ্টির জন্য কমে গেছে। হাটে ভিড় কম কারণ ঘুরতে আসা লোক কম, শুধুই ক্রেতা আসছে। এখন শেষ মুহূর্তে লাভ বেশি না। বড় গরু বিক্রিতে লোকসান বেশি, ছোট গরুতে লাভ হচ্ছে কিছুটা।
সারাবাংলা/আরএফ/একে