মার্কিন অর্থনীতি ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ!
৯ জুন ২০২৩ ২০:০৮ | আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ ০০:৩২
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ফাঁস হওয়া গোপন গোয়েন্দা নথির বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দর বেড়ে যায়। সেসময় উত্তোলন বাড়িয়ে বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য সৌদি আরবকে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কথা না শুনে রাশিয়ার সঙ্গে মিলে তেল উত্তোলন আরও হ্রাস করে। এতে তেলের দর না কমে আরও বাড়তে থাকে। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে রুশ তেলেরও চাহিদা কমেনি।
সৌদি আরবের এমন সিদ্ধান্তে চটে যায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগে সৌদি আরবের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে ডেমোক্রেটরা। সে সময় সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনর্মুল্যায়নের দাবি উঠে ডেমোক্রেট শিবির থেকে।
সৌদি আরবকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরিণাম ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এমন হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি করার হুমকি দেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সৌদি আরবের প্রতি কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিলে তিনি বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবেন না। তিনি ওয়াশিংটনকে অর্থনৈতিক ক্ষতির হুমকি দেন।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমবিএস-এর হুমকির বিষয়টি একটি কূটনৈতিক গোপনীয় নথিতে রয়েছে যা একটি সার্ভারে ফাঁস করা হয়েছে। তবে যুবরাজ মোহাম্মদ সালমান কবে কী মাধ্যমে এই বার্তাটি ওয়াশিংটনকে দিয়েছিলেন তা পরিষ্কার করে বলা হয়নি।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসমক্ষে সৌদি সরকার কূটনৈতিক বিবৃতির মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কয়েক দশকের পুরনো মার্কিন-সৌদি আরব সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তন আনার হুমকি দেন।
গত অক্টোবরে সৌদি আরবকে পরিণাম ভোগের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জো বাইডেন। কিন্তু ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সৌদি আরব নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাইডেন প্রশাসন। বর্তমানে সৌদি আরব সফর করছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিনকেন। মোহাম্মদ বিন সালমান ও অ্যান্তোনি ব্লিনকেন জেদ্দায় একটি বৈঠকও করেছেন। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে এ সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোহাম্মদ বিন সালমানের এমন হুমকির ব্যাপারে ওয়াশিংটন পোস্টকে মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা সৌদি আরবের এই ধরনের হুমকি সম্পর্কে অবগত নই। সাধারণত, এই ধরনের নথিগুলো প্রায়ই একটি মুহূর্তের তথ্য প্রকাশ করে, কিন্তু সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি দূতাবাস ওয়াশিংটন পোস্টকে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
সারাবাংলা/আইই