চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি
৫ জুন ২০২৩ ১৯:৪৯
ঢাকা: দেশে চলতি অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে গত মে মাসে। সার্বিক মূল্যস্ফীতির এ হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে। যেটি গত এপ্রিল মাসে ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। স্ইে সঙ্গে খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং খাদ্য খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যষ্ফীতির হার হয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ব্যাপক বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে এবারের মূল্যস্ফীতিতে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এর কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার (৫ মে) সংস্থাটি এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বোরো ধান ভালো হয়েছে। বাজাওে চালের দাম স্থিতিশীল আছে। তারপরও কেন এত মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেল আমার জানা নেই। তবে একটা বড় কারণ হতে পারে ভোজ্য তেলসহ যেসব নিত্যপণ্য আমদানি করে আনতে হয় সেগুলোর কারণে দাম বাড়তে পারে। কেননা ডলার দাম বেড়ে গেছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডলারে পণ্য কিনতে গেলে আমাদেও দেশে দাম বেশি পড়ে যায়। সেই সঙ্গে আমদানি পণ্যেও দাম বেশি হলে দেশীয় পণ্যের দোমে তার একটা প্রভাব পড়ে। এসব কিছু কারণেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে।’
বিাবিএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে গ্রামে বেড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতি। মে মাসে এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিকত ৮৫ শতাংশে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া খাদ্য পণ্যেও মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, এপ্রিলে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এদিকে শহরে সবার্কিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ, এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এছাড়া খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে হয়েছে হয়েছে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যা এপ্রিল মাসে ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিবিএস এর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ, আগষ্টে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ, অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ, নভেম্বরে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছর (২০২৩-২৪) দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখতে চায় সরকার। এ জন্য জাতীয় বাজেটে ৬ শতাংশের কাছাকাছি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেন।
এ সময় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা প্রচেষ্টা চলছে। এসব সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে আগামী অর্থবছর মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই বার্ষিক গত মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়াবে বলে আশা করছি।’
মজুরি হার বাড়ছে কচ্ছপ গতিতে: মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে বাড়লেও মজুরি হার বাড়ছে কচ্ছপ গতিতে। মে মাসে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ, এপিলে ছির ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে কৃষিতে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। এছাড়া শিল্পে মজুরি হার কেমে হয়েছে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়ে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
সারাবাংলা/জেজে/একে