Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রস্তাবিত বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ না থাকায় হতাশ রংপুরবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডন্ট
৩ জুন ২০২৩ ১০:২৫

রংপুর: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জন্য বিশেষ কোন পরিকল্পনা না থাকায় হতাশা জানিয়েছেন এলাকাবাসী। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাট নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকলল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগের প্রত্যাশা ছিল তাদের।

বিজ্ঞাপন

এদিকে আয়-ব্যায়ের হিসেব না বোঝ খেটে খাওয়া মানুষের আশংকা উর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের দাম, ও নতুন করে নানা ক্ষেত্রে করের ব্যাপ্তি বাড়ানোতে আরও বাড়বে জীবনযাত্রার ব্যয়। বিভিন্ন পণ্য কিনতে গুনতে হবে বাড়তি অর্থ। প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সংগঠক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রংপুর অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নেই। হাতে গোনা দু–চারটি ক্ষুদ্রশিল্প ছাড়া শিল্পায়ন বলতে রংপুরে কিছুই নেই। তাই শিল্পায়ন ও বাণিজ্যে বিনিয়োগ ও কর্মস্থান তৈরিতে বাজেটে আলাদা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান তারা।

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি নির্ভরতার পাশাপাশি শিল্প নির্ভরতা বাড়াতে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাট নীতি প্রণয়ন, তিস্তা মহাপরিকলল্পনা বাস্তবায়ন, রংপুরে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ‘‘নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রি’’ গঠনের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত ছিল।

রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি আতিক উল্লাহ বলেন, বাজেটে প্রতিবছরই উত্তরাঞ্চল বঞ্চিত হয়। এখানে কর্মসংস্থান তৈরিতে বিশেষ কোন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না যা খুবই দুঃখজনক। এছাড়া আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন অথচ করযোগ্য আয় নেই এমন ব্যক্তিদের ওপর ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে যা সাধারণ মানুষকে চাপে ফেলবে।

বিজ্ঞাপন

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর মহানগরের সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে সরকারকে ‘থোক’ বরাদ্দ দিতে হবে। এ অঞ্চলে কোনো শিল্পায়ন গড়ে ওঠেনি, ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠেনি। এখানে বিনিয়োগের তেমন সুযোগ না থাকায় কেউ বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

এই বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে উল্লেখ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলনে, প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি অনুপাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের তুলনায় কমেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ১ দশমিক ৭৬ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী একটি দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করা উচিত। অথচ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ২০২৩-২৪ সালের উন্নয়ন বাজেট মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ১১ শতাংশ। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় দশমিক ৪৭ শতাংশ কম।

‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি নজরুল ইসলাম হাক্কানি বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে না কেন। আমরা চাই এ বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি আলাদা বরাদ্দ রাখা হোক।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে সরকারি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা যারা সরকারি চাকরি করি আমাদের জন্য একটু কষ্ট হয়ে গেছে। আশা করেছিলাম এ বাজেটে আমাদের চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ কোনো বরাদ্দ থাকবে। আমরা চাই আমাদের জন্য বাজেটে নতুন কিছু হোক।

কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, শিক্ষায় যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয় তা অপ্রতুল। আর যেটাই দেওয়া হয় আগামীতে যেনো পুরোটাই শিক্ষার উন্নয়নে ব্যবহার হয়। এতে যেন কোন অপচয় না হয় এদিকে সরকারের নজর রাখা খুবই জরুরি।

সারাবাংলা/আরএফ/

'তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও' ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট টপ নিউজ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর