Wednesday 01 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রস্তাবিত বাজেট মানুষের কষ্ট আরও বাড়াবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ জুন ২০২৩ ২২:১৬

ঢাকা: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের ‘কষ্ট আরও বাড়াবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে বনানীর নিজ বাসায় দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই বাজেট হচ্ছে প্যাট্রন ক্লাইন্ট রিলেশনশিপ অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি, রেনসিংকি অর্থাৎ ভাড়া দিতে হবে, চাঁদা দিতে হবে, কমিশন দিতে হবে- এর মাধ্যমে অর্থনীতি চলতে হবে। অ্যাসট্রাকটিভ ইন্সটিটিউশন মানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটের জন্য সংগঠিতভাবে তৈরি করে দিয়েছে, এরাও লুটপাটের অংশীদার হয়ে গেছে। ফলে বাংলাদেশের জনগণের কষ্ট বাড়ছে, এই বাজেটে আর বাড়বে।’

বিজ্ঞাপন

বাজেটের ঋণনির্ভরতার প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, ‘ঋণ তারা (সরকার) দেশের থেকে, দেশের বাইরে থেকে নিচ্ছে। দেশের ভেতরের ব্যাংকগুলো থেকে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে, দেশের বাইরে থেকে যে ঋণ নিচ্ছে, এই ঋণ তো আগামী প্রজন্মকে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ যে শুধু এই মুহূর্তে কষ্টে আছে তা তো না। তারা ঋণের মাধ্যমে যে লুটপাটের অর্থনীতি সৃষ্টি করেছে, এর ভিকটিম বাংলাদেশের মানুষ। যে বৈদেশিক ঋণ যেটা ৮/১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ছিল সেটা আজ এক লাখ কোটি টাকায় চলে গেছে।’

প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কি না? প্রশ্ন করা হলে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই বাজেট সরকার দিচ্ছে না আইএমএফ দিচ্ছে, সেটাও দেখার বিষয়। আইএমএফ যে গাইড লাইনগুলো দিচ্ছে, তারা তো সুনিশ্চিতভাবে বলেছে, কী কী করতে হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কী কারণে আজ নিম্ন পর্যায় এসে নেমেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মূলত আইএমএফ’র শর্ত অনুযায়ী তাদের বাজেট দিতে হবে। আবার তার বাইরে যদি অব্যাহতভাবে লুটপাটের অর্থনীতি, পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি চলতে থাকে সেটা অন্যকথা। তারা (সরকার) তো বিপদে আছে; আইএমএফ’র শর্ত না মানলে এদিকে বাজেট সাপোর্ট থাকে না, তেমনি লুটপাটের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি বাধাগ্রস্থ হয়। এই অবস্থায় সরকার অর্থনীতিকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেখান থেকে বের হতে হলে এটার রাজনীতি সমাধান দরকার। আর সেই রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ, একটি সরকার; যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে এবং জবাবদিহিতা থাকবে।’

আমির খসরু বলেন, ‘বাজেট কী? বাজেট হচ্ছে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন, রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন। আজ যেখানে অবৈধ দখলদার সরকার বসে আছে তাদের তো রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। বাজেটে তাদের নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে, সাধারণ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাজেটে তো বড় বড় অংক দিচ্ছে আর বাংলাদেশের মানুষকে বড় বড় অবকাঠামোর কথা বলছে। বড় বড় অবকাঠামো মধ্যে বড় বড় চুরি, বড় বড় ডাকাতি ছাড়া কিছু দেখছি না। বড় বড় অবকাঠামোর বড় বড় অংকের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। সেজন্য তো দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। সেজন্য আজ ব্যাংকে টাকা নেই। সেজন্য তো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বেহাল অবস্থা।’

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গত ৩০ বছরে যে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলাম সেটা এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়েছে। একটা দলীয় চিন্তার ভিত্তিতে পৃষ্ঠপোষকতার লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তৈরি করে এটা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি বাজেটের আকারের কথা বলছেন। তারা ঋণ নিচ্ছে। এই ঋণ নিয়ে তারা ঘি খাচ্ছে। আপনি ঋণ নিয়ে যদি ঘি খান এই ঋণ তো আপনি পরিশোধ করতে পারবেন না। এই ঘিয়ের টাকা দেশের জনগণকে পরিশোধ করতে হবে।’

সংকটের নিরসনে করণীয় কী?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জনগণের সরকার ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

২০২৩-২৪ অর্থবছর টপ নিউজ প্রতিক্রিয়া বাজেট বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর