বাজেটে সংকটের স্বীকৃতি নেই, সমাধানও অপ্রতুল: সিপিডি
১ জুন ২০২৩ ২০:১৪ | আপডেট: ১ জুন ২০২৩ ২১:৪৩
ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ‘স্বীকৃতি ও সমাধান’ দুটিই অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। একইসঙ্গে বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে নূন্যতম ২ হাজার টাকা কর আরোপের সিদ্ধান্তকে অবিবচনাপ্রসূত বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি। আর মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, সেই লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য সংগঠনটির।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাজধানীর সিপিডি কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রথম বিষয়টি হচ্ছে চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো ঘোষণা করা হলো সেই সূচকগুলো যেভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে আমাদের কাছে মনে হয়েছে তা বাস্তবতা বিবর্জিত এবং অর্জন করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয় যে বিষয়টি হচ্ছে- মূল্যস্ফীতির চাপ এবং পণ্যের ঊর্ধ্বমুখীতার লাগাম টেনে ধরার জন্য যে প্রস্তাবগুলো করা হয়েছে, যে সমাধানগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো কিন্তু সম্ভব না এবং সেগুলোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির হার যে তারা বলেছে ৬ শতাংশ, তা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণের জন্য যে আর্থিক পদক্ষেগুলো… আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু কিছু পণ্যের ওপর কর রেয়াত দেওয়া যায় আমরা কিছুটা স্বস্তি পেতাম। সেখানে আমরা তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখিনি।
তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে, সেটি খুবই ভালো। তবে আমরা দেখছি সরকারি ৩৮টি সেবা পেতে রিটার্ন সাবমিট করতে হবে এবং রিটার্ন সার্টিফিকেট পেতে ২ হাজার টাকা দিতে হবে। সেটি আমাদের কাছে অবিবেচনাপ্রসুত মনে হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সেবা পেতে যে ২ হাজার টাকা ন্যূনতম কর নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি তুলে দেওয়া উচিত।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে বাজেটে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। এই বাজেটটি এমন একটি সময়ে প্রণয়ন করা হয়েছে যখন আন্তর্জাতিক দুটি সংস্থার বিভিন্ন শর্ত রয়েছে, যেহেতু তারা ঋণ দেবে। বাজেট ডকুমেন্টে তিনবার আইএমএফ এর কথা বলা হয়েছে। তবে বাজেটে আইএমএফর এর শর্তের কথা বলা হয়নি পরিষ্কারভাবে। তবে সেই শর্ত পালনের ইঙ্গিত রয়েছে বাজেটে। সবমিলিয়ে চলমান অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে ঘোষিত বাজেটে স্বীকৃতি ও সমাধান দুটিই অপ্রতুল।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ইতিহাসের বৃহত্তম এই বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে এবারের বাজেটের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকটে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায়।
প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের চূড়ান্ত আকার (ব্যয়) ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে আয় ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ৫ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে