নরসিংদীতে লালন আখড়ায় হামলা-ভাংচুর, আহত ৩
৮ মে ২০২৩ ১৮:১৪ | আপডেট: ৮ মে ২০২৩ ১৮:১৫
নরসিংদী: জেলার বেলাব উপজেলায় লালনের আখড়াবাড়ি পুলকিত আশ্রমে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় আশ্রম ও বাদ্যযন্ত্র ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তিন বাউল শিল্পী আহত হয়েছেন।
রোববার (৭ মে) বিকেলে উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় শেরপুরের মিন্টু বাউল (৩০), খুলনার রিয়াদ ভূঁইয়া (৩২) ও কিশোরগঞ্জের খোকন বাউল (৪০) আহত হয়েছেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভাবলা গ্রামে লালনের আখড়াবাড়ি পুলকিত আশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেন জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া। তার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ছিল হামলাকারী শেখ জাহাঙ্গীর ও শাহীনের। তারা তিন জন সম্পর্কে চাচাতো-মামাতো ভাই।
আশ্রমের বাউলরা জানান, সোমবার পুলকিত আশ্রমে সাধুসঙ্গের দিন ধার্য ছিল। সে উপলক্ষে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু-ফকির, বাউল শিল্পীরা আগে থেকেই আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন। রোববার দুপুরে শেখ জাহাঙ্গীর ও শাহীনের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয় জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়াকে খুঁজতে আশ্রমে আসেন। জাহাঙ্গীরকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা আশ্রমে ভাংচুর শুরু করলে তাদের বাধা দেন বাউল শিল্পীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আগত শিল্পীদের উপর হামলা চালায় তারা। এমনকি তাদের সঙ্গে থাকা তানপুরা, দোতারাসহ সব বাদ্যযন্ত্র ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, লালন সংগীতকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করছেন কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শিল্পীরা। তারা বলেন, হামলাকারীদের কাউকে আমরা চিনি না। আমরা গান করছিলাম। হঠাৎ তারা এসে আমাদের মারধর করেন এবং যন্ত্র ভেঙে দেয়। আমরা এর বিচার চাই।
কুষ্টিয়া থেকে লালন আখড়ায় আসা আলম নামে এক বাউল বলেন, ‘হঠাৎ করেই কয়েজন লোক এসে আমাদের নোংরা ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমাদের গান-বাজনা বন্ধ করতে বলে। এক পর্যায়ে লাঠিসোটা নিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমাদের দোষটা কোথায়? গান গাওয়া কি অপরাধ!’
পুলকিত আশ্রমের দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া বলেন, ‘এখানে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে অনেক বাউল ও সংগীত প্রেমী মানুষ এসে গান-বাজনা করে থাকেন। গতকাল সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রসহ আশ্রমে এসে বাদ্যযন্ত্র ভাংচুর ও শিল্পীদের উপর হামলা করে। এতে তিন জন আহত হয়েছেন। আমি সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বেলাব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ তানভীর আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই জাহাঙ্গীর ভুইয়া এবং শেখ জাহাঙ্গীরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ঘটনাটি উসকানিমূলক কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। লিখিত অভিযোগ পেলেই আইনি ব্যবস্থা নেব।’
সারাবাংলা/পিটিএম