ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা চায় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন
১ মে ২০২৩ ১৩:৫৩ | আপডেট: ১ মে ২০২৩ ১৭:৩৫
ঢাকা: ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা ও মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। সোমবার (১ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে সংগঠনটির পক্ষে এসব দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সংগঠনটির পক্ষে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত কর এবং আইএলও সনদ ১৮৯ অনুস্বাক্ষর। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা রোধ করতে আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করাসহ সব কারখানায় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে অ্যান্টি হ্যারেজমেন্ট কমিটি গঠন, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালায় সন্নিবেশিত শ্রমিক স্বার্থবিরোধী বিধিসমূহ বাতিল পূর্বক নতুন বিধিমালা প্রণয়নসহ ইত্যাদি।
সমাবেশে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে রয়েছে শ্রমিকদের সক্রিয় ভূমিকা যা জাতির অগ্রগতির অন্যতম শক্তি। কিন্তু আমার দেশের শ্রমিকরা সবচেয়ে সস্তায় কাজ করে যাচ্ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের জীবনযাত্রার মান একেবারেই নিম্নমুখী। এছাড়া দুর্বল শ্রম আইনের কারণে শ্রমিকদের অধিকার অনেকক্ষেত্রেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশেষ করে নারীরা একদিকে কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতা, মজুরি বৈষম্য, মাতৃত্বকালীন ছুটি না পাওয়া, যথার্থ স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ ও নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা না পাওয়াসহ নানাবিধ শোষণ-বঞ্চনার শিকার।’
তিনি বলেন, ‘দেশের পোশাক শিল্পসহ অর্থনীতির মূলধারার কর্মক্ষেত্র গুলোতে ও উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী নানাভাবে মে দিবস মর্যাদার সহিত পালিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু আজও সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি শ্রমিকদের অধিকার। তাই শ্রমিকদের প্রতিটি ক্ষেত্রে
অংশগ্রহন ও ক্ষমতায়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ অবশ্যই প্রয়োজন। এই ব্যাপারে মালিক শ্রেণি ও সরকারকে বিশেষভাবে হস্তক্ষেপ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় পোশাকশিল্পের সকল কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও যৌথ দর কষাকষির পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকেরা বিদেশে যেমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে আবার দেশে এসেও সামাজিক বৈষমের শিকার হচ্ছে। এতে করে তাদের অধিকার ব্যাপকহারে লঙ্ঘন হচ্ছে। সে কারণে আমাদের আরও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।’
শ্রমিকরা জানান, শ্রমিকদের শ্রমিক হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবে দেখতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শ্রমিকদের ওপর নানারকম নির্যাতন রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় পোশাক শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং জাতি অনেক ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হবে। দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য।’
সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যসহ কয়েকশ গার্মেন্টস শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও
গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন জাতীয় প্রেসক্লাব টপ নিউজ ন্যূনতম মজুরি