অসম বিয়ের ‘পরিণতি’— স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা
২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:১১ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীতে তালাবদ্ধ বাসা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার পলাতক স্বামীকে নেত্রকোণা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাতে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার দূর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা কালিকাবরে আত্মগোপনরত অবস্থা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গ্রেফতার মো. সাখাওয়াত হোসেনের (২২) বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার কলসী দিঘী সড়কে হাজী মাহমুদ মিয়া কলোনির তৃতীয় তলার ১২ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসা থেকে সাখাওয়াতের স্ত্রী রীনা আক্তারের (২৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রীনা’র বাবার বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। এ ঘটনায় তার বাবা সাখাওয়াতকে আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
র্যাব জানিয়েছে, লাশ উদ্ধারের আগেরদিন ২৪ এপ্রিল দুপুরে সাখাওয়াত ফোন করে রীনা’র পরিবারের এক সদস্যকে জানায়, রীনা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে রীনা’র পরিবার তা বিশ্বাস করেনি। কারণ, সেদিন রীনা তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তারা না যাওয়ায় পরদিন রীনা’র পরিবারের সদস্যরা মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু উভয়ের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের পর তারা জানতে পারেন, বাসাটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। তখন পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তালা ভেঙে বিছানার ওপর চাদর দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার সাখাওয়াতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ এর সদর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, রীনা আক্তার কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। পরিবারকে না জানিয়ে ছয় মাস আগে রীনা তার প্রেমিক সাখাওয়াতকে বিয়ে করেন।
ঈদ উপলক্ষে সাখাওয়াত ময়মনসিংহে তাদের গ্রামের বাড়িতে রীনাকে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের দিন অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল সকালে তারা চট্টগ্রামে ফেরেন। বাসায় ফেরার পর ঝগড়ার জেরে সাখাওয়াত শ্বাসরোধ করে রীনাকে খুন করে। পরে লাশ চাদর দিয়ে মুড়িয়ে বিছানায় রেখে পালিয়ে যায়।
র্যাব কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘তাদের বিয়েটা ছিল অসম। রীনা সাখাওয়াতের চেয়ে ৫-৬ বছরের বড় ছিল। সাখাওয়াত টিকটক করত। টিকটকের সূত্রেই তাদের মধ্যে প্রেম হয়। তবে সাখাওয়াত সংসারের প্রতি সিরিয়াস ছিল না। আবেগের বশে বিয়ে করলেও স্ত্রী কিংবা সংসারের প্রতি দায়িত্ববোধ তার তৈরি হয়নি। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। ঘটনার দিন ঝগড়ার মধ্যেই স্ত্রীকে গলাটিপে করে খুন করে।’
সারাবাংলা/আরডি/একে