Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি দেশবিরোধী: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ মার্চ ২০২৩ ১৮:০২

ঢাকা: ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি-কে ‘দেশবিরোধী’ হিসেবে অভিহিত করে অবিলম্বে তা বাতিলে দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর হোটেল লেখশোরে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দাবি জানান।

‘মহাবিপর্যয়ে বিদ্যুত খাত: গভীর খাদে অর্থনীতি’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনা আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি একটা ভয়ংকরভাবে অসম চুক্তি, দুরভিসন্ধিমূলক চুক্তি। এই কথা শুধু আমরা বলছি না, এটা প্রথম এসেছে ওয়াশিংটন পোস্টে। চুক্তির সব কপি এখন প্রত্যেকটি মিডিয়া হাউজের কাছে আছে এবং যারা বিদ্যুত খাত নিয়ে কাজ করে, তাদের কাছে আছে। এটা এখন ওপেন সিক্রেট।’

আজকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রশ্ন উঠেছে যে, কীভাবে তারা (সরকার) এরকম চুক্তি করতে পারল। আদানির সঙ্গে এই চুক্তি এই দেশবিরোধী, এই চুক্তি জনগনবিরোধী। আমি এই ফোরাম থেকে বলছি, এই চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুখাতে যে ইমডেমনিটি আইন করা হয়েছে, সেই আইন বাতিল করতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি এই সরকারের কোনো দয়া-মায়া নেই, দায়বদ্ধতা-জবাবহিদিতা নেই। তারা চুরি করবে, বিদেশে টাকা পাঠাবে, বিদেশে তারা প্রাসাদ তৈরি করবে, ব্যবসা করবে, বিলাসী জীবনযাপন করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা কেন করছে সরকার? তারা করছে টাকা দিয়ে ভবিষ্যতে আবার নির্বাচন কিনে নেবে। তারা বিভিন্ন সংগঠন যারা নির্বাচন চালায় তাদেরকে তারা পরিস্কার ক্যাশ টাকা দিয়ে দেবে। মানতে চায় না নির্বাচন কমিশন। কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার থেকে শুরু করে ওই পর্যন্ত কিন্তু খাম চলে যায়, পুলিশের কাছে খাম যায়, বিজিবির কাছে খাম যায় এমনকি স্ট্যাকিং ফোর্স যারা থাকে, তাদের কাছেও খাম যায়। এটা সত্য, ঘটেছে ২০১৮ সালে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এখন আবার নতুন কৌশল হয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন খবর-টবর শুনি। উনারা বলছেন যে, আগের মতো তো পারা যাচ্ছে না পুলিশ দিয়ে, ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে। নতুন কৌশল কি? ভিডিপি-আনসার দিয়ে করানো হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবার যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো হয়ে গেছে, সেই নির্বাচনে হঠাৎ দেখা গেলো কাউন্টিং করতে করতে একজন চেয়ারম্যান এগিয়ে আছেন, তারপর দেখা গেলো আরেকজন এগিয়ে চলে গেলো। ওখানে দেখা যাচ্ছে যে ফলাফল লিখছেন ওইটা বদলে দিচ্ছে। তার একজন ভিক্টিম কুমিল্লার সাক্কু। আমার এলাকায় একজন চেয়ারম্যান ২৫ বছর ধরে আছেন, তাকে এভাবে ১৯ ভোটে হারিয়ে দিলো। এই হচ্ছে নতুন নতুন কৌশল।’

মির্জা ফখরুল ‘এই সরকার পরিকল্পিতভাবে জনগণের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। খুব বড় বড় কথা বলে যে, মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, সিঙ্গাপুর বানিয়ে ফেলেছে, মালয়েশিয়া বানিয়ে ফেলেছে। আরে মালয়েশিয়ায় যদি পত্রিকায় এরকম কয়েকটা খবর বেরুতো তারপরের দিন মালয়েশিয়ার ওই মন্ত্রিসভার কল্লাটা যেত। এটা বাস্তবতা।

প্রতারণা ছাড়া ওদের (সরকার) কোনো কৌশল নাই। আজকে প্রায় বক্তৃতায় বলেন যে, জনগণই হচ্ছে দেশের মালিক। সেই জনগণকে আপনি গত ১৪ বছর ধরে প্রতারণা করে আসল অধিকারটা কেড়ে নিয়েছেন- ওই যে একটা দিন ভোট দেওয়ার অধিকারটা। একটা সরকার কী করে এতো অনৈতিক কাজ করতে পারে, একটা সরকার কী করে সংসদে মিথ্যা কথা বলে- ভাবা যায় না।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সামিট, ইউনাইটেড, এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল, বাংলা ক্যাট, ওরিয়ন, আরপিএসএল, এফবিসিএল, মোহাম্মদী গ্রপ, হোসাফ গ্রুপ, ডরিন—এই ১০টি গ্রুপ সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী। তারা ৫০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এরা সবাই শাসক গোষ্ঠির লোক।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থায় চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি হাসপাতালে সাধারণ মানুষের যে কী কষ্ট আপনি চিন্তা করতে পারবে না। আমি কিছু দিন আগে আমার এক আত্বীয়কে দেখতে পিজি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দ্যাট ইজ বেস্ট হসপিটাল ইন দ্য কান্ট্রি। ওখানে দেখি যে কেবিন সেই কেবিনে চেয়ার একটা ছিল দেয়ালের সঙ্গে লাগানো। আমি বসতে গেলে আমার আত্বীয় বললেন, ওই চেয়ারে বইসেন না, ওর একটা পায়া ভাঙা।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। নিরবকে আগে, গতকাল মুন্না (মোনায়েম মুন্না ও এসএম জাহাঙ্গীর) গ্রেফাতার করা হয়েছে। কোনো ওয়ারেন্ট নাই, গোলমাল নাই। আজকে গোটা দেশকে একটা ডিপস্টেট বানিয়ে ফেলেছে। ঘর থেকে বেরুলে আপনি ধরা পড়ছেন। বাসায় বসে কথা বললে ধরা পড়ছেন। আবার একটা আইন করার প্রস্তাব দিয়েছে ডাটা প্রটেকশন ল। এই আইন হলে ইউ আর ফিনিসড।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে পদত্যাগ করার জন্য। এছাড়া এই দেশ বাঁচতে পারবেন না। এজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

এ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে যুগ্ম মহাসচিব কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান, শাম্মী আখতার, এ্যাবের আশরাফ উদ্দিন বকুল, শাহজাহান আলী, গোলাম মাওলা, মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, একেএম জহিরুল ইসলাম জহির, নিয়াজ উদ্দিন ভুঁইয়া, শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, ‍সুমায়েল মুহাম্মদ, মাহবুবুল আলম, মো. হানিফ প্রমুখ।

সারাবাংলা/ এজেড/ এনইউ

আদানি গ্রুপ টপ নিউজ ফখরুল

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর