‘নাছির-নওফেলের তরুণ তুর্কিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি’
৪ মার্চ ২০২৩ ২১:৪৬ | আপডেট: ৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদ্যপ্রয়াত সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের শোকসভায় তিনি একথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ শোকসভার আয়োজন করে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে নাছির, নওফেল আছে। তাদের তরুণ তুর্কীদের নিয়ে আমরা মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তায় পড়ি। যখন পত্র-পত্রিকায় দেখি দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি, এটা কেন হবে? একই দল করি, একই আদর্শের কর্মী, পাল্টাপাল্টি কেন হবে? পত্র-পত্রিকায় এসব দেখে আমরা লজ্জা পাই।’
‘তবে একটা কথা বলি, যে যত কথাই বলুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। যারা অপরাধী তাদের শাস্তি দিচ্ছেন। আবরার হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরও শাস্তি হয়েছে। শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না।’
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের গতি কমে গেছে, গলার জোর বেড়ে গেছে। বলেছিল ১০ তারিখ দেশ দখল করবে, পরের দিন থেকে খালেদা জিয়া দেশ চালাবে। তারেক রহমানের ডাকে তাদের নেতাকর্মীরা হান্ডি, পাতিল, লোটা-কম্বল নিয়ে সাতদিন ধরে এক এক সমাবেশের নামে পিকনিক করেছে। এখন তারা লাল কার্ড থেকে নীরব পদযাত্রার আয়োজন করেছে। আবার আজ শুনলাম নিরীহ মানববন্ধন করবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপি বলে আমরা (আওয়ামী লীগ) লুট করছি, দুর্নীতি করছি। আরে হাওয়া ভবনে বসে লুটপাট কি আমরা করেছিলাম, নাকি তারেক জিয়া করেছিল? বিদেশে টাকা পাচার করেছে কারা? এই বিএনপি বর্গীর চেয়েও ভয়ংকর। ওরা ক্ষমতায় গেলে পুরো দেশকে গিলে খাবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গিলে খাবে।’
প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন। মৃত্যুর তিন দিন আগে ঢাকার হাসপাতালে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন-আমি চট্টগ্রামে যাব, আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযান করব। এমন নেতা সত্যিই হয় না।’
সভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সব সদস্য অস্থায়ী, শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান স্থায়ী। কাগজে দেখলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অস্থায়ী সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন- আগামী নির্বাচনে নাকি বিএনপি না আসলে আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে আসে নাই, আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সংকটে পড়ে নাই, বিএনপিই পড়েছে। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচন ট্রেনের পাদানিতে চড়ে নির্বাচনে গিয়েছিল এবং মাত্র ছয়টি সিট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা হয় নাই বরং বিএনপিই সংকটে পড়েছে।’
‘বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উকিল আব্দুস সাত্তারের মতো বিএনপির কত শত আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে নির্বাচনে আসার জন্য ! বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য গয়েশ্বর বাবুসহ বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাই।’
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শোকসভায় কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দফতর সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, উত্তরের সভাপতি এম সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, নগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বক্তব্য দেন।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য দেননি।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম