Saturday 12 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করি এটাই গৌরবের, ইশতেহারে চমকতো থাকছেই

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১ মার্চ ২০২৩ ১৯:০৫ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২৩ ১৯:১০

ঢাকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এই রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েটদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হয়। নির্বাচিত ক্যাটাগরিতে ২৫ জন সাবেক শিক্ষার্থী সিনেটের সদস্য হন।

আগামী ১৮ মার্চ ঢাকার কেন্দ্রসমূহে এবং ৪ ও ১১ মার্চ ঢাকার বাইরের কেন্দ্রসমূহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী গ্রাজুয়েটরা পূর্ণ প্যানেলে অংশ নিতে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে নেই বিএনপিপন্থীদের প্যানেল। আর প্রথমে প্যানেল দিলেও পরে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতপন্থী গ্রাজুয়েটরা। এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৬০ হাজার ২৫৯জন। গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসেবে সর্বমোট ৬৮ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। তবে জামায়াতপন্থী ২৫ জন নির্বাচন বর্জন করায় এখন প্রার্থী আছেন ৪৩ জন।

বিজ্ঞাপন

এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করা ‘টিম অপরাজেয়’। নয় জনের একটি প্যানেল এই ‘টিম অপরাজেয়’। নানান সমস্যার সমাধান এবং র‍্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়ে তারা তাদের ইশতেহার সাজিয়েছেন।

‘টিম অপরাজেয়’ প্যানেল থেকে ১৪ নম্বর ব্যালটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ।

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় নির্বাচন ও নিজের প্যানেল নিয়ে কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সারাবাংলার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট রাহাতুল ইসলাম রাফি

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা: প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কী ধরনের চিন্তা আপনাকে উদ্বুদ্ধ করেছে?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান। এটি দেশের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার এবং নেতৃত্ব তৈরির কারখানাও বটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পর সিনেটের এই নির্বাচনের গুরুত্ব বেড়েছে। এখান থেকে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। সে জায়গা থেকেই নির্বাচন করার ইচ্ছা।

সারাবাংলা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবস্থা কী রকম বলে মনে করেন?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: যাত্রা শুরুর পর থেকে আজ অবধি সুনাম ও সফলতার সঙ্গে পথ চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামেও পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির সকল অর্জনের বাতিঘর। গৌারবের এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস যেন বাংলাদেশেরই ইতিহাস। দেশের ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত। ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাঙালির প্রতিটি গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ছিলাম ভাবতেই গর্বে বুকটা ভরে যায়। প্রাণের এই প্রতিষ্ঠানে আবাসন সমস্যাসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।

সারাবাংলা: ঢাবির মৌলিক সমস্যাগুলো কি? নির্বাচিত হলে সমস্যা সমাধানে কীভাবে কাজ করবেন?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: ইশতেহারে এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলেছি। সব সমস্যা স্মার্টলি সমাধান করাও সম্ভব।

সারাবাংলা: রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন কেন রাজনৈতিক বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: আসলে যারা রাজনৈতিক বলয় থেকে নির্বাচনটি দেখেন তারাই ভালো বলতে পারবেন। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন আমি সবাইকে যোগ্য ও অভিজ্ঞ মনে করি। তবে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের নির্বাচনের জন্য কোন রাজনৈতিক দলের পরিচয় প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। আমাদের ‘টিম অপরাজেয়’ প্যানেল পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক এবং আমাদের মেনিফেস্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য।

সারাবাংলা: সিনেটে ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি থাকলেও গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনেও শিক্ষকদের আধিক্য দেখা যায়। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: দীর্ঘকাল ধরে এভাবেই হয়ে আসছে এবং এটি চলমান প্রেক্ষাপটে খুব অস্বাভাবিকও নয়। এখনকার শিক্ষকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে অ্যাক্টিভ স্টেক হোল্ডার। তারা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীও বটে। সিনেট-সিন্ডিকেট সব খানেই তাদের প্রতিনিধিত্ব ও আধিক্য আছে। সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি আলাদা আছেন। রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটদের মধ্যেও শিক্ষকদের আধিক্য সেই কারণেই আছে অনেক দিন ধরে। তবে ধীরে ধীরে সেই সময়ের পরিক্রমায় এই অবস্থার পরিবর্তনও হচ্ছে। অন্য পেশার লোকজনও আস্তে আস্তে সিনেটে আসছেন। এবার একেবারেই রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়া সিনেটে প্যানেল আছে। সেখানে সব শ্রেণি-পেশার লোকজনই আছেন।

সারাবাংলা: অন্য প্যানেল থেকে আপনাদের ভিন্নতার জায়গাটা কোথায়?

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করি এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় গৌরবের। আর ‘টিম অপরাজেয়’র প্যানেলের ইশতেহারে চমকতো রয়েছেই।

সারাবাংলা: সারাবাংলাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

টিম অপরাজেয়’র ইশতেহার:

রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘টিম অপরাজেয়’ তাদের ইশতেহারে বলছে, নির্বাচিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি, ক্যালটেক, স্ট্যানফোর্ড, যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উত্তম চর্চাগুলো বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সেরাদের তালিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা থাকবে তাদের। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান বড় একটি সমস্যা আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবেন তারা। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর আবাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক হল নির্মাণ এবং পুরাতন হলগুলোকে আধুনিকায়ন করে পরিবেশবান্ধব আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতেও কাজ করবে এই প্রার্থীরা।

এছাড়া, শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত নিশ্চিত, শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা, চাকুরি মেলার আয়োজন, ক্যারিয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রেডিট এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা, মানসম্মত হাসপাতাল-ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, আইনজীবী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত নয়জনের প্যানেলে আছেন-সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কামরুন নাহার মাহমুদ, আইনজীবী এস কে গোলাম মাহমুদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম, আলোকচিত্রী শেখ ইয়ার আহমেদ (পিয়ারু), এনআরবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান, সিএফসি’র সিইও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সৈয়দ এ মু’মেন, আইনজীবী জাকির হোসেন খান এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস এম মুজাহিদুল ইসলাম। এদের মধ্যে সাতজনই নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।

সারাবাংলা/আরআইআর/এনইউ

টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

ছবির গল্প মার্চ ফর গাজা
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪৫

আরো

সম্পর্কিত খবর