হজ নিবন্ধনের সময় বাড়লো আরও ৭ দিন
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫৪ | আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:০২
ঢাকা: হজ নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত এ সময় বাড়ানো হয়েছে। নিবন্ধনের কোটা পূরণ হলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। উপ-সচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহিনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধনের সবশেষ ক্রমিক আগের সিরিয়াল বহাল রেখে এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। নিবন্ধনের কোটা পূরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে।’
এবার হজ যাত্রায় সরকারিভাবে জন প্রতি ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বেসরকারিভাবে এ খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮। অর্থাৎ এ বছর সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়েই দেড় লাখ বেড়েছে প্যাকেজ ফি। আর এ কারণেই এবার হজে যাওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিবন্ধণে লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। ফলে পাঁচ দিন সময় বাড়িয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাতেও সারা না পাওয়ায় আরেক দফা সময় বাড়ানো হলো।
করোনা মহামারির পর এবারই প্রথম বাংলাদেশ পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী পাঠানোর সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু খরচ অতি মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায়, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজে গমনে ইচ্ছুকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে প্রতি বছর যেখানে নিবন্ধনের জন্য মানুষ অতিরিক্ত টাকা খরচ করে থাকেন। সেখানে এবার সময় বাড়িয়েও হজযাত্রী মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে আরেক দফা সময় বাড়ালো ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। বরাবরের মতো এবারও সরকারি-বেসরকারিভাবে আলাদা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি জনপ্রতি ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকার হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর এক দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্যাকেজের থেকে ১০ হাজার টাকা কমে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। সরকারি-বেসরকারি উভয় প্যাকেজেই গত বছরের চেয়ে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ২০২২ সালে হজের সর্বনিম্ম প্যাকেজ ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা।
প্যাকেজ ঘোষণার পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রাক নিবন্ধিত গমনে ইচ্ছুকদের নিবন্ধন শেষ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে আশানুরূপ নিবন্ধন না করায় ২২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিন সময় বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
নতুন জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের হজের হজযাত্রী, হজ এজেন্সি এবং সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সৌদি সরকার এ বছর হজযাত্রীদের ভিসার ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভিসা পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে। এই পদ্ধতির অধীনে ভিসার আবেদন সাবমিট করার জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় সকল পস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নতুন এ পদ্ধতিতে ভিসা করার জন্য পাসপোর্ট আপাতত নিজের কাছে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করে যারা এরই মধ্যে ঢাকার আশকোনার হজ অফিসে পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন, ভিসা কার্যক্রম শুরু হলে তারা সেখানে গিয়ে বায়োমেট্রিক ভিসার আবেদন করতে পারবেন। অথবা সেখান থেকে পাসপোর্ট নিয়ে অন্য কোনো সেন্টারে থেকেও ভিসার আবেদন করতে পারবেন। ভিসা কার্যক্রম শুরু হলে ভিসা সাবমিট সেন্টার এবং ভিসার পদ্ধতি সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, হজযাত্রী নিবন্ধনের নির্ধারিত সময় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল চারটা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, হজ প্যাকেজ ঘোষণার পরের দিন থেকে অনেকে নিবন্ধন শুরু করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হাজার জনের কোটার বিপরীতে সরকারিভাবে ৭ হাজার ২৭০ জন, আর বেসরকারিভাবে ১৯ হাজার ৬১৭ জন হজ যাত্রী নিবন্ধন করেছেন। জানা গেছে, গত দুই তিন দিন ধরে নিবন্ধন করার পরে তা বাতিল করছেন। আবার টাকাও তুলে নিচ্ছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধনের সময় আরও বাড়ানো হতে পারে। আর তা হতে পারে ১০ মার্চ পর্যন্ত।
সূত্র মতে, চলতি বছর হজের জন্য কোরবারির খরচ ছাড়া প্যাকেজ ধরা হয়েছে সরকারিভাবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা, আর বেসরকারিভাবে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। কোরবানিসহ ওই ব্যয় সাত লাখ ছাড়িয়ে যাবে। যা মধ্যবিত্তদের জন্য বহন করা কষ্টসাধ্য। জানা গেছে, হজে খরচ বাড়ার অন্যতম কারণ বিমান ভাড়া। আর এই অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে কথা বলে আসছেন বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকরা।
সারাবাংলা/জেআর/এনএস