৪৭০টি উড়োজাহাজ কিনছে এয়ার ইন্ডিয়া
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫০ | আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৬
ভারতের টাটা শিল্পগোষ্ঠীর মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া ৪৭০টি উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। উড়োজাহাজগুলো ফ্রান্সের এয়ারবাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং থেকে কিনছে এয়ার ইন্ডিয়া। তবে উড়োজাহাজগুলোর দর প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষ।
নাম উল্লেখ না করে চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, যাত্রীবাহী উড়োজাহাজগুলো কিনতে ৭০ থেকে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে এয়ার ইন্ডিয়ার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়া মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে কিনছে ১৯০টি ৭৩৭ ম্যাক্স, ২০টি বোয়িং ৭৮৭ এবং ১০টি ৭৭৭এক্স মডেলের উড়োজাহাজ। ডলারের মূল্যে বোয়িংয়ের ইতিহাসে এটি তৃতীয় বৃহত্তম ক্রয়াদেশ। সংখ্যার দিক থেকে এটি কোম্পানিটির ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম।
বিমান সংস্থাটি ফ্রান্সের এয়ারবাসের কাছ থেকে কিনছে ৪০টি ওয়াইড-বডি এ৩৫০ মডেলের উড়োজাহাজ। এছাড়া এয়ারবাসের কাছ থেকে আরও ২১০টি ন্যারো-বডি এ৩২০নিও কিনছে এয়ার ইন্ডিয়া।
সবমিলিয়ে ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ২৫০টি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ কিনছে এয়ার ইন্ডিয়া। আর মার্কিন কোম্পানি বোয়িং থেকে কিনছে ২২০টি। বিশাল এই ক্রয়াদেশের মাধ্যমে এয়ার ইন্ডিয়া বাণিজ্যিক এভিয়েশন শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্রয়াদেশের রেকর্ড গড়েছে।
টাটা সন্সের চেয়ারম্যান নটরাজন চন্দ্রেশেকরন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে একটি ভিডিও কনফারেন্সে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তির তথ্য প্রকাশ করেন।
এসময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই চুক্তিকে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি মাইলফলক বলে বর্ণনা করেন।
এদিকে বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, এই চুক্তির ফলে আমেরিকার ৪৪টি রাজ্যে ১০ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই চুক্তিটি মার্কিন-ভারত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের শক্তিকেও প্রতিফলিত করে। বাইডেন তার বিবৃতিতে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আমি আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।
প্রসঙ্গত, ১৯৩২ সালে টাটার হাত ধরেই এয়ার ইন্ডিয়ার পথচলা শুরু হয়। তখন এর নাম ছিল টাটা এয়ারলাইন্স। ১৯৪৬ সালে সেই সংস্থার নাম বদলে হয় এয়ার ইন্ডিয়া। ১৯৫৩ সালে কেন্দ্র সরকার এয়ার ইন্ডিয়া অধিগ্রহণ করে। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছিলেন জেআরডি টাটা।
তবে ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়া চালাতে গিয়ে হিমশিম খায়। সরকারি সংস্থা হিসেবে প্রায় ৭০ হাজার কোটি রুপি লোকসান হয় এয়ার ইন্ডিয়ার। এই সংস্থার জন্য ভারত সরকারের দৈনিক ক্ষতি হচ্ছিল ২০ কোটি রুপি। বছরের পর বছর লোকসানে চলা এয়ার ইন্ডিয়া কার্যত ঋণভারে জর্জরিত ছিল। এভাবে সংস্থা আর চালানো সম্ভব হচ্ছিল না সরকারের পক্ষে।
ঋণের চাপে ধুকতে থাকা এয়ার ইন্ডিয়াকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে ২০২১ সালে দরপত্র আহ্বান করে ভারত সরকার। সেসময় টাটা সন্সের দেওয়া দরপত্রটি গ্রহণ করে সরকার। এতে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা টাটাদের হাতে ফেরে। এর পর থেকেই এয়ার ইন্ডিয়ায় বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা করে আসছে টাটা সন্স। ইতোমধ্যে বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলোর ভিতর আধুনিকায়নে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করছে টাটা সন্স।
সারাবাংলা/আইই