ভাই কেন বলছেন, আমি কেমন ভাই— সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন এসিল্যান্ড
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:১৭ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:২৯
গোপালগঞ্জ: ভাই বলে সম্বোধন করায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের ওপর রেগে গেলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন খান। শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুঠোফোনে একটি সংবাদের বক্তব্য নেওয়ার সময় এই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান এসিল্যান্ড।
সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজনে মুঠোফোনে এসিল্যান্ডকে কল দেন স্থানীয় সাংবাদিক আশিক জামান। নিজের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার শুরুতেই ‘ভাই যে বিষয়ে ফোন দিয়েছি’ বলাতে এসিল্যান্ড রেগে যান। সাংবাদিককে বলেন, ‘তার আগে বলেন আপনি এসিল্যান্ডকে ভাই কেন বলতেছেন, আমি আপনার কেমন ভাই?’
এসিল্যান্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন সাংবাদিক কী এসিল্যান্ডকে ভাই বলে ডাকবে? আপনি স্যার বলতে বাধ্য নন কিন্তু মিনিমাম একটি ডেকোরাম আছে।’
এসিল্যান্ড মামুন খানের বিরূপ আচরণে মর্মাহত গোপালগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম হুমায়ুন কবির। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু সাংবাদিকরাই নয়, একজন সাধারণ মানুষও একজন এসিল্যান্ডকে স্যার ডাকতে বাধ্য নয়। তার অধীনে যারা চাকরি করেন তারা স্যার ডাকতে পারেন। কিন্তু এসিল্যান্ডের ওই আচরণে আমরা বিস্মিত। ’
গোপালগঞ্জের প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘এরইমধ্যে বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছি। ওই কর্মকর্তা কেন সাংবাদিকের ওপর রেগে গেলেন আমি তা জানতে চাইব।’
এর আগেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) মো. মামুন খান। তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে ছয় মাসের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজরা গ্রামের বাসিন্দা লিটন মণ্ডলকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজরা গ্রামের অধিবাসী লিটন মণ্ডল তার ড্রেজিং মেশিন দিয়ে স্থানীয়দের জমি ভরাটের কাজ করে আসছিলেন। গত ১০ বছরের সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড মো. মামুন খান তার ড্রেজিং মেশিন জব্দ করে নিয়ে আসেন।
পরে লিটন মণ্ডল এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে গেলে মো. মামুন খান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানার সাজা দেন। এছাড়া ড্রেজিং মেশিনের সঙ্গে জব্দ করে আনা পাইপগুলো ভেঙে ফেলেন এসিল্যান্ড। পরে এসব জব্দ করা মালামাল এসিল্যান্ড অফিসের ফেসবুক পেইজেও আপলোড করেন তিনি।
এরপর গত অক্টোবরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অফিসে ডেকে জরিমানা করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও মামুন খানের অভিযান পরিচালনার ক্ষমতা স্থগিত চেয়ে রিট করা হয়।
সারাবাংলা/একে