Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মৃত্যুপুরী তুরস্ক-সিরিয়া: ভূমিকম্পে প্রাণহীন ১৮০০, নিখোঁজ অনেকে

সারাবাংলা ডেস্ক
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:০৫ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৩৬

ঢাকা: শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আহত হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। এসব মানুষের বেশির ভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের অভিযান চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষই ঘুমাচ্ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে বাঁধ সেধেছে প্রতিকূল আবহাওয়া। শীতকালীন তুষারঝড়ের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তুষারে অনেক সড়ক ঢেকে গেছে।

এক প্রতিবেদনে বিবিসির জানায়, ভূমিকম্পে উভয় দেশে অনেক ভবন ধসে পড়েছে। এতে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক টুইট বার্তায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা একসঙ্গে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠব। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ইউনিট সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমন সইলু বলেন, ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস। অনেক ভবন ধসে পড়েছে ও অনেক মানুষ ভেতরে আটকা পড়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ভয়াবহ এই বিপর্যয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪৫টি দেশ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এরদোয়ান।

তুরস্কে প্রাণহানি ১০ হাজার ছাড়াতে পারে : ইউএসজিএস

তুরস্কে গত ৮ দশকের বেশি সময় পর রেকর্ড সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। প্রতিবেশী সিরিয়াতেও প্রচণ্ড কম্পন অনুভূত হয়েছে। দুই দেশ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮০০

কেবল তুরস্কেই প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস।

সংস্থাটি বলেছে, শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং এটি এক লাখে পৌঁছারও আশঙ্কা আছে।

১০ মিনিটে বের হচ্ছে মৃতদেহ: কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধি সুহাইব আল-খালাফ সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বলেছেন, উদ্ধারকারীরা মরিয়া হয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে বের করার চেষ্টা করছেন।

সুহাইব আল-খালাফ বলেন, ‘উদ্ধারকারীরা প্রত্যেক ১০ মিনিটে একটি করে মরদেহ বের করে আনছেন।’ সিরিয়াজুড়ে অসংখ্য ভবন ধসে পড়েছে। তিনি বলেন, এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে শত শত মানুষ আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আল-জাজিরার এই প্রতিনিধি বলেন, সিরিয়ার দীর্ঘদিনের যুদ্ধের কারণে স্থানীয় চিকিৎসাসেবা খাত আগে থেকেই বিপর্যস্ত। ভূমিকম্পের কারণে হাজার হাজার মানুষ আহত হওয়ায় এখন সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো।

তিনি বলেন, লোকজনকে হাসপাতাল, এমনকি হাসপাতালের বারান্দায়ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রক্তের প্রচুর সংকট দেখা দিয়েছে।

ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে লোকজনকে উদ্ধারের তৎপরতা আগামী কয়েক দিন ধরে চলতে পারে বলে সিরিয়া ও তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রথম ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল তুরস্কের গজিয়ানতেপের চারপাশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানকার তাপমাত্রা দিনে ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে হিমাঙ্কের নিচে থাকবে বলে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।

পাশাপাশি গজিয়ানতেপে প্রায় ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার তুষারপাতের পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গজিয়ানতেপের উত্তরের শহরগুলোতে ভারী তুষারপাত হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এছাড়া দেশটির পার্বত্য অঞ্চলে আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা একেবারে হিমাঙ্কের নিচে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার অর্থ ওইসব এলাকায় ৫০ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে।

সারাবাংলা/একে

তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর