বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় খুন হন আলামিন, ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:২৪ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:২৭
ঢাকা: জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনটিতে যোগ দেন কুমিল্লার অনার্স পড়ুয়া তরুণ ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম আল আমিন। পরে ভুল বুঝতে পেরে বাড়ি ফিরে যেতে চাইলে সহযোগীরা হত্যা করে তাকে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) এ ঘটনায় নিহত আমিনুল ইসলাম আলামিনের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ২০ জনের বিরুদ্ধে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক এ.এস.এম. এমরান বিষয়টি আমলে নিয়ে পাঁচদিনের মধ্যে রুমা থানাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন, কুমিল্লার মোখলেছুর রহমানের ছেলে আনিসুর রহমান মাহমুদ (৩২), শামীম মাহফুজ স্যার (৪৭), নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোশাররফ হোসেন বাবু (৩৪), সিলেটের হাফিজ মাওলানা হোসাইনের ছেলে আব্দুল্লাহ মায়মুন ওরফে শায়েখ (৩৪), সিলেটের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মাসকুর রহমান রনবীর (৪৪), সুনামগঞ্জের মৃত সৈয়দ আব্দুল কালামের ছেলে সৈয়দ মারুফ আহমেদ মানিক (৩১), আব্দুল কাদের সুজন ওরফে ফয়েজ সোহেল, কুমিল্লার মৃত মমতাজ আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ হাবিব (৩৫), বান্দরবানের জাওতন লনচেও এর ছেলে নাথানা লনচেও ওরফে নাথান বম (৫০), লাল মোহন বিয়াল ওরফে কর্নেল সলোমান (৫০), ভাংচুর লিয়ান (৪৩), রুমার সাংবেন বম এর ছেলে লালদন সাং বম (২৭), কুমিল্লার আবদুর রহমানের ছেলে দিদার ওরফে চম্পাই (১৭), সিলেটের আব্দুস সালামের ছেলে শিবির আহমেদ (২৬), ইসমাইল হোসেন হানজালা ওরফে ফাহিম, কুমিল্লার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সালেহ আহম্মদ সাইহা (২৭), সিলেটের মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন(২৯), কুমিল্লা মজিবুর রহমানের ছেলে ইমরান বিন রহমান শিথিল ওরফে বিল্লাল (১৮)। কুমিল্লার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. বায়েজিদ ইসলাম ওরফে মোয়াজ ওরফে বাইরু (২১) ও নোয়াখালীর আবদুল কুদ্দুস এর ছেলে নিজাম উদ্দিন ওরফে ইউসুফ ওরফে বাপুয়াল (৩২)
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এম ডি খলিল।
আরও পড়ুন: কবর থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসার ফিল হিন্দাল শারকীয়া সদস্যের লাশ চুরি
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট তাবলিগের কথা বলে তার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জানতে পারেন স্থানীয় কুবা মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহর প্ররোচনায় বিভিন্ন মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে বান্দরবানের রুমা উপজেলার গহীন অরণ্যে আশ্রয় নেয় আল আমিন। প্রশিক্ষণ চলাকালে তার ছেলে বাড়ি ফিরে যেতে চাইলে সহযোগীরা তাকে হত্যা করে।
পরে আল-আমিনকে গহীন অরণ্যে কবর দেন জঙ্গিরা। সব খবর শুনে ঘটনাস্থলে কবর পাওয়া গেলেও সেখান ছেলের মরদেহের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে এজাহারে জানান মামলার বাদী।
গতকাল সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বান্দরবানের থানচির গভীর অরণ্যে এক জঙ্গির লাশের খবর পেয়ে এখানে অভিযান চালালেও লাশের কোনো সন্ধান পায়নি র্যাব। অভিযানের আগেই কবর থেকে লাশ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে আলামত হিসেবে বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ফিরে আসে র্যাব।
সারাবাংলা/একে