Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জনগণের মনে পুলিশের প্রতি যে আস্থা, সেটা অক্ষুণ্ণ রাখবেন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫৬ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:০২

ঢাকা: জনগণের পুলিশ হিসেবে সেবা দিতে পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জনগণের মনে পুলিশের প্রতি যে আস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী এখন জনগণের পুলিশ হিসাবেই জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আগে যেমন পুলিশের নাম শুনলে মানুষ ভয় পেত। এখন জানে পুলিশ সেবা দেয় তাদের পাশে দাঁড়ায়। এই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই জনগণের সেবা করে যাবেন। জনগণের মনে পুলিশের প্রতি যে আস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেটা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ সবসময় মানুষের পাশে আছে, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও পুলিশ মানুষের পাশে থাকে। পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ সেখানেও পুলিশ ভূমিকা রাখে। মানুষের জানমাল বাঁচানোর জন্য নিচের জীবনকেও উৎসর্গ করে পুলিশ, তারা যেকোনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হয় না। এটাই হচ্ছে পুলিশের সবচেয়ে বড় কাজ এবং সেটা তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। তাই পুলিশ বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে পুলিশের প্রশংসা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে দেশে বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। জামায়াত-শিবির-বিএনপির লোকেরা প্রকাশ্যে পুলিশকে হত্যা করেছে। সে সময় ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তারপরও পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। অতীতের মতো আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় প্রধানমন্ত্রী অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে সাড়ে তিন হাজার বাস ট্রাক, ১৯টি ট্রেন ৯টি লঞ্চ পুড়িয়ে ধ্বংস করাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার চিত্রও তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জীবনকে বাজি রেখে এইসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড রুখে দিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য হলো অগ্নিদগ্ধ হয়ে যে মানুষেরা বেঁচে আছেন কারো চেহারা এতো বিকৃত হয়ে গেছে যে মনুষ্য সমাজে তারা যেতে পারে না এ রকম একটা অবস্থা। এই ধরনের জঘন্য ঘটনা বাংলাদেশে যেনো আর না ঘটে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি-সন্ত্রাসী; এটা বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। বাংলাদেশে একটি ঘটনাই ঘটেছিল। হলি আর্টিজানের ঘটনার সঙ্গে আমাদের পুলিশের অফিসাররা যে অবস্থায় ছিল, ইফতার করা হচ্ছিল, সেই সময় ছুটে গিয়েছিলেন এবং দুই জন জীবনও দিয়েছেন। আমরা এই জঙ্গির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।’

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত বলিষ্ট ভূমিকা রেখে যাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। সেই সঙ্গে শান্তি রক্ষা মিশনে মহিলা কন্টিনজেন্ট ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছেন এতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে বলেও জানান সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ব্যবহার করে খুব সহজেই মানুষ বিপদে পড়লে উদ্ধার কাজে এগিয়ে যেতে পারছে বলেও মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় এ দেশের পুলিশকে ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলতেন “আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। আপনারা বিদেশী শোষকদের পুলিশ নন, জনগণের পুলিশ।’’ আমরা চাই আমাদের পুলিশ বাহিনী ‘জনবান্ধব পুলিশবাহিনী হিসাবেই জাতির পিতার সেই আকাঙ্খা পূরণ করবেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং স্যাংশন যদি না হতো বাংলাদেশ—আমরা এত দিনে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। তারপরও জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ২০২০ সালে আমরা উদযাপন করেছি। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছি। এই সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’

‘এই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা কার্যকর করেই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ; যে বাংলাদেশ হবে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ পুলিশ পদক-বিপিএম ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

টপ নিউজ পুলিশ সপ্তাহ

বিজ্ঞাপন

বাসচাপায় ২ কলেজছাত্র নিহত
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর