Wednesday 12 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কালাজ্বর শনাক্তে দ্রুত ও কার্যকরী পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি গবেষকদের

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২ জানুয়ারি ২০২৩ ২৩:৪১

ঢাকা: লিশম্যানিয়াসিস রোগের কয়েকটি প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর কালাজ্বর শনাক্তকরণে নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের দাবি, উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি দ্রুত ও কার্যকরী।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গবেষক দলটির প্রধান অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মনজুরুল করিম।

বিজ্ঞাপন

এই অধ্যাপক দাবি করেন, রিয়েল টাইম পিসিআরভিত্তিক এই মলিকুলার ডায়াগনস্টিক পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ নির্ভুল, নিখুঁতভাবে কালাজ্বর শনাক্তকরণে সক্ষম এবং একটি রোগীবান্ধব পদ্ধতি। তিনি বলেন, কালাজ্বর রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল নমুনা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহার করার দৃষ্টান্ত ভারতীয় উপমহাদেশে এই প্রথম।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মনজুরুল করিম বলেন, ‘বিগত দশকে বেশকিছু পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) ভিত্তিক কালাজ্বর নির্ণয় প্রক্রিয়া প্রচলিত হয়েছে। যদিও এই প্রক্রিয়া আগে ব্যবহৃত পদ্ধতি থেকে রোগ নির্ণয়ে অধিক কার্যকারী। এসব প্রক্রিয়ায় রক্ত, অস্থি-মজ্জা, যকৃত, প্লীহা, লিম্ফ নোডের টিস্যুর নমুনা ব্যবহার করা হয়। যেহেতু ইতোমধ্যে একাধিক গবেষণায় লেশম্যানিয়ার দেহের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে, তাই আমরা প্রস্রাবের নমুনা ব্যবহার করে রিয়েল টাইম পিসিআর প্রযুক্তির সাহায্যে কালাজ্বর শনাক্তের চেষ্টা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে এ রোগ নির্ণয়ে রক্তের ইমিউনোক্রোমাটোগ্রাফিক পরীক্ষা এবং অস্থি- মজ্জা, যকৃত, প্লীহা, লিম্ফ নোডের টিস্যু অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হতো। যার প্রথমটির রোগ নির্ণয়ে নির্দিষ্টতা কম, আর অন্যটিতে টিস্যু সংগ্রহের সময় মারাত্মক রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘কালাজ্বরে আক্রান্তদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা প্রস্রাবের নমুনা ব্যবহার করে তাতে পরজীবীর অস্তিত্ব রিয়েল টাইম পিসিআরের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়েছিল। রোগীদের একই সেট থেকে রক্তের নমুনা তুলনা করে পরীক্ষার ফলাফলগুলো যাচাই করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে এই রিয়েল টাইম পিসিআরভিত্তিক কালাজ্বর নির্ণয় পরীক্ষণটি আগের এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারী কালাজ্বর রোগীদের থেকে সংগৃহীত অস্থি-মজ্জার নমুনার ওপর প্রয়োগ করা হয়। রিয়েল টাইম পিসিআরভিত্তিক পরীক্ষণটি প্রস্রাবে রক্ত এবং পূর্ববর্তী অস্থি মজ্জার নমুনাগুলো থেকে পরজীবী শনাক্ত করার ক্ষেত্রে শতভাগ সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপগুলোতে অর্থাৎ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী সুস্থ ব্যক্তি কালাজ্বরের ন্যায় অন্যান্য রোগ যেমন, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং যক্ষমা আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রস্রাব এবং রক্তের নমুনায় কোনোরূপ সংবেদনশীলতা পরিলক্ষিত হয়নি।’

এই পদ্ধতির ব্যবহার বাংলাদেশকে কালাজ্বর নির্মূলের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করে অধ্যাপক মনজুরুল করিম বলেন, ‘প্রস্রাবের নমুনা ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য সংবেদনশীলতা ও নির্দিষ্টতা পাওয়া গেছে। এগুলো রক্ত বা আরও জটিল নমুনা যেমন অস্থি-মজ্জা বা প্লীহা এর নমুনাভিত্তিক কালাজ্বর নির্ণয় পদ্ধতিকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে।’

সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম

কালাজ্বর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর