দুয়ার খুললো বাণিজ্য মেলার, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
১ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০৬ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৯
ঢাকা: মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসরের পর্দা উঠেছে। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি, রোববার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে মেলার অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সভাপতিত্ব করেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মো. জসিম উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচল উপশহরে দ্বিতীয় বারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে মেলার আসর বসেছে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে। পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দ্বিতীয়বারের মতো বসবে এ মেলা।
পূর্বাচলে এ মেলা বসায় অনেক খুশি স্থানীয়রা। তারা বলেন, ‘এখানে এ আন্তর্জাতিক মেলা বসায় বিভিন্ন স্টলে কাজের সুযোগ বেড়েছে। এছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে এখানকার লোকজন বাড়তি টাকা উপার্জন করবে।’ এমনকি মেলাকে ঘিরে এলাকাতেও বেশ উন্নয়ন হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে মেলা ও এর আশপাশের নিরাপত্তায় মেলার নিয়োজিত বিপুল পরিমাণ পুলিশ, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা পদক্ষেপ ছিল।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এফ এম সায়েদ জানান, মেলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। মেলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয় দেখভাল করবেন। সাদা পোশাকেও বিশেষ টিম নিরাপত্তায় কাজ শুরু করেছেন। ফলে নিরাপদ পরিবেশে এ মেলা পুরোপুরি জমে উঠবে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার গেটের ইজারাদার মের্সাস আবদুল্লাহ এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘এ বাণিজ্য মেলা দেখতে আমাদের ঢাকায় যেতে হতো। আর এ মেলা এখন আমাদের রূপগঞ্জে হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এবার মেলার প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে বড়দের জনপ্রতি ৪০ টাকা এবং বাচ্চাদের ২০ টাকা। মেলা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আশা করছি এবছর মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ হবে।’
ইপিবি সূত্র জানায়, মেলায় এবারও সাধারণ, প্রিমিয়াম, সংরক্ষিত, ফুড স্টল ও রেস্তোরসহ ১৩ ক্যাটাগরিতে স্টল রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এবছর ১৭টি প্যাভিলিয়নসহ মোট ৩৩১টি স্টল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে লিজ দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার গেট প্রতিদিন সকাল ১০টায় খোলা হবে এবং বন্ধ হবে রাত ৯টায়। সরকারি ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।
এছাড়া, দর্শণার্থীরা অনলাইনে বুকিং করলেই টিকিটের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় পাবেন।
সরকার পরিবহন সুবিধা দিতে ৭০টি বিআরটিসি বাস এই পরিষেবাতে সংযুক্ত করেছে। এগুলো চলবে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে মেলাস্থল পর্যন্ত। ন্যূনতম ৩৫ টাকা ভাড়ায় এসব বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ১০টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১৭টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। এছাড়া গতবার শিশুপার্ক ছিল না, এবার মিনি শিশুপার্ক রয়েছে। ফুডকোর্ট নিচে চলে গেছে, পরিবেশও ভালো হয়েছে। পরিসর বড় হয়েছে। গতবারের তুলনায় এবারের মেলা আরও বেশি জমজমাট হবে।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/এনআর/এমও