বৃষ্টির মতো কুয়াশা রংপুরে, ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪১ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪২
রংপুর: গত কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতে জড়সড় রংপুরসহ আশেপাশের জেলার মানুষ। বৃষ্টির মতো রাতভর পড়ছে কুয়াশা। অনেক বেলা করেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলছে সড়কে। এছাড়া তীব্র শীতের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রংপুরে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিমাংশে মৃদু শৈত্য প্রবাহ ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তীব্র কুয়াশার কারণে অনেক বেলা করেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন সড়কে। এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবিকার তাগিদে রাস্তায় রিকশা-অটোরিকশা চালালেও শীত ও কুয়াশায় যাত্রী পাচ্ছেন না তারা।
তীব্র শীত ও কুয়াশায় নগরীর শাপলা চত্বরে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন রিকশা চালক শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রংপুরে এমন শীত ও কুয়াশা অতীতে পড়েছে কি না, আমার জানা নাই। আজকেই সবচেয়ে বেশি শীত এবং কুয়াশা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। রাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জীবিকার তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি কিন্তু কোনো যাত্রী পাচ্ছি না।’
অটোচালক হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে দৃষ্টিসীমা কম থাকায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে। শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।’
এদিকে তীব্র শীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরাই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্ভি হচ্ছেন বেশি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা থেকে এসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছোট্ট শিশু মনজিলা। শিশুটির মা সুফিয়া বেগম জানান, গত কয়েকদিন থেকে প্রচুর শীতে নিউমোনিয়া হয়েছে মনজিলার। এখন চিকিৎসা চলছে। তবে আগের তুলনায় অনেকটা সুস্থ আছে সে।
রংপুর হারাগাছ থেকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন কৃষক আমিনুর রহমান। তিনি জানান, শীতের কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। দু’দিন ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আগের তুলনায় ভালো আছেন তিনি।
রংপুর মেডিকেলের পাঁচটি ইউনিট নিয়ে গঠিত মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি আছেন ৩৭৬ জন। আর দুটি ইউনিট নিয়ে গঠিত শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ২৩১ জন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘শীতকালীন সময়ে শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। উত্তরাঞ্চলে এবার বেশি শীত পড়ায় প্রতিদিনই শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসা শেষে চলেও যাচ্ছেন।’
সারাবাংলা/এনএস