Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আবাদি জমি কমলেও বেড়েছে ফসলের নিবিড়তা: বিবিএস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:১৬ | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:১৭

ঢাকা: দেশের আবাদযোগ্য নিট আবাদি জমির পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ফসলের নিবিড়তা। অর্থাৎ একই জমিতে একাধিকবার একাধিক রকম ফসল উৎপাদন হচ্ছে। ২০০৮ সালের তথ্য অনুযায়ী নিট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর। কিন্তু ২০১৯ সালের শুমারির তথ্যে দেখা গেছে এ জমির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার হেক্টরে। ফলে তুলনামূলক নিট আবাদি জমির পরিমাণ ১১ বছরে কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর। এছাড়া প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ হারে। তবে ধারণা ছিল বছরে ১ শতাংশ হারে কমছে কৃষি জমি।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষি শুমারি-২০১৯ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

রাজধানী আগারগাঁও এ বিবিএস অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড.শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড.শাহনাজ আরেফিন। বিবিএস’র মহাপরিচালক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কৃষি (শস্য,মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি প্রকল্পের পরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায়।

এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের এতদিন পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করাটা ঠিক হয়নি। এছাড়া ১০ বছর অন্তর অন্তর এই শুমারি হওয়ার কথা থাকলেও সেটি কখনো হয়নি। এটি একটি নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। কৃষি, অর্থনৈতিক ও জনশুমারি ২ বছর অন্তর হওয়া উচিত। এতে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া লেবার ফোর্স সার্ভেটি প্রতিবছরই করা দরকার। সেইসঙ্গে এসব শুমারি প্রকল্প থেকে না করে রাজস্ব বাজট থেকেই নিয়মিত করা দরকার।’

ড.শামসুল আলম বলেন, ‘জিডিপির হিসাবে কৃষির অবদান কমলেও প্রকৃত পক্ষে আর্থিক কাঠামোর মধ্যে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষি যেকোনো দুর্যোগে আমাদের স্বস্তির জায়গায় রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন প্রতিবছর ১ শতাংশ হারে কৃষি জমি কমছে। এটি একটি মিথ বা ধারণা। প্রকৃত চিত্র হচ্ছে প্রতিবছর শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ হারে কৃষি জমি কমছে। যেটি এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে সময়ের মধ্যে এবং দ্রুত প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে মোট খানার (পরিবার) রয়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৫২ হাজার। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার। এর মধ্যে কৃষি খানা (পরিবার) হচ্ছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার, ২০০৮ সালে যা ছিল ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার। ফলে দেখা যাচ্ছে, কৃষি পরিবার বেড়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিবারের সংখ্যা যে হারে বেড়েছে সেই হারে কৃষি পরিবারের সংখ্যা বাড়েনি। এছাড়া ২০১৯ সালের হিসেবে কৃষি মজুর খানার সংখ্যা ৯২ লাখে উন্নীত হয়েছে। আগে যা ছিল ৮৮ লাখ ৪৪ হাজার। মৎস্যজীবি খানা ১২ লাখ ১৮। দেশের কৃষি পরিবারে পরিচালনাধীন জমি ২ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার একর। যা গত ২০০৮ সালে ছিল ২ কোটি ৩৫ লাখ ৫ হাজার। এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ কমেছে। শস্যের নিবিড়তা ২১৪ শতাংশ, যা ২০০৮ সালে ছিল ১৭৩ শতাংশ। অর্থাৎ একই জমিতে একাধিক সময় ফসল উৎপান করা হচ্ছে। যেমন— আগে অনেক জমি দুই ফসলি থাকলেও এখন তা ৩ বা ৪ ফসলি হয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে মোট মোরগ মুরগির সংখ্যা ১৯ কোটি ৯৪ লাখ ৩ হাজারে উন্নীত হয়েছে, যা আগে ছিল ৯ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজারে। তবে এই হিসাবে বাণিজ্যিকভাবে মুরগি বা যেকোনো পশু পালনের চিত্র তুলে আনা হয়নি। শুধুমাত্র পরিবার ভিত্তিক মুরগি বা পশু পালনের সংখ্যাটি দেখানো হয়েছে। হাঁসের সংখ্যা রয়েছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ৯৩ হাজার, যা ২০০৮ সালে ছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৩৩ হাজার। এছাড়া দেশে গরু রয়েছে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৫২ হাজার, যা ২০০৮ সালে ছিল ২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার। অন্যদিকে ছাগলের সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার থেকে উন্নীত হয়ে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে আউস ধানর জমির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৫৯ হাজার হেক্টরে, ২০০৮ সালে এটি ছিল ২৫ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর। আমন চাষের জমি বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৭ হাজার হেক্টর, যা আগে ছিল ৯৩ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর। বোরো চাষের জমি বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর, যা আগে ছিল ১ কোটি ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর। গমের জমি বেড়ে হয়েছে ৮ লাখ ২ হাজার হেক্টর, আগে বছর ছিল ৬ লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর। এছাড়া পাট চাষের জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার হেক্টর, যা আগে ছিল ১০ লাখ ১১ হাজার হেক্টর বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

কৃষি শুমারি-২০১৯ টপ নিউজ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানল, নিহত ৫
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর