Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশের জনসংখ্যার ২.৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী: বিবিএস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:২৬

ঢাকা: দেশের মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। এদের মধ্যে পুরুষ ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং নারী ২ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে খুলনা বিভাগে, ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে, ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। জন্মগত সমস্যায় সবেচেয়ে বেশি ৪১ দশমিক ০৯ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে। আর কর্মক্ষম হলেও কর্মের বাইরে রয়েছে ৬৬ দশমিক ২২ শতাংশ প্রতিবন্ধী।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ-২০২১ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও এ বিবিএস অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস’র মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। বিশেষ অতিথি সমাজ সেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। বক্তৃতা করেন, বিবিএস’র ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ ইউং’র পরিচালক মাসুদ আলম। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ প্রকল্পের পরিচালক ইফতেখাইরুল করিম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দিপংকর রায়।

ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, এসব তথ্য সরকারের নীতি নির্ধারণ এবং গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র ব্যাপক অবদান রাখবে। এর ফলে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ এবং তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি পরিকল্পনা নেওয়াটা সহজ হবে।

ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, প্রতিবেদনে দেখা গেছে সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রতিবন্ধীরা সব ধরনের কাজে আড়াইগুণ পিছিয়ে আছে। এটি একেবারেই নতুন একটি বিষয়। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের মধ্যে কর্মে নিয়োজিত নয় এমন সংখ্যা মোট প্রতিবন্ধীর ৬৬ দশমিক ২২ শতাংশ। এর বাইরে কর্মে নিয়োজিত আছেন ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এসব তথ্য নীতি নির্ধারণের ব্যাপক কাজে আসবে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী হিসাব করলে মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০ লাখ ৩৩ হাজার ২৬৮ জনে। এছাড়া দেশের মোট প্রতিবন্ধীর মধ্যে শহরের জনসংখ্যার ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং পল্লি এলাকায় ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শারিরীক প্রতিবন্ধী ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া অটিজম আছে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

প্রতিবন্ধীতা তৈরি করে এমন মানসিক অসুস্থ্যতা আছে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ। আরও আছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ, বাক প্রতিবন্ধী শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ, বুদ্ধি বৃত্তিক প্রতিবন্ধী শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ। এছাড়া সেব্রিয়াল পালসি শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ, ডাউন সিড্রোম শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ, শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ, বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধীতা শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধীতা শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জরিপ পরিচালনা জন্য হাতে নেওয়া প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এটি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় দেশের ৮০০ নমুনা এলাকা থেকে ৩৬ হাজার খানা (পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগের প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৫১ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ দশমিক ৪১, বরিশালে ২ দশমিক ৪২, ময়মনসিংহে ২ দশমিক ৪৫, রাজশাহীতে ৩ দশমিক ৩০ এবং রংপুর বিভাগের প্রতিবন্ধী আছে ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। প্রতিবন্ধীতার কারণগুলোর মধ্যে অসুস্থতা জনিত কারণে মানুষ প্রতিবন্ধী হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ, গাছ বা ছাদ থেকে পড়ে ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ, সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আগুন দুর্ঘটনায় ১ দশমিক ০৮ শতাংশ।

এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ, রেল দুঘর্টনায় শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ এবং অন্যান্য দুঘর্টনায় প্রতবন্ধী হচ্ছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ। সেই সঙ্গে বেশি বয়স্ক মানুষদের মধ্যে প্রতিবন্ধীতার হার বেশি বলে লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যমূলক আচরণ বা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন এমন প্রতিবন্ধীর শতকরা হার ৪৩ দশমিক ৭০। এছাড়া যাদের নিবন্ধন রয়েছে এমন প্রতিবন্ধীরা যারা কখনও ভাতা পেয়েছেন তাদের হার ৯১ দশমিক ৪৩ শতাংশ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলে কখনো ভাতা পেয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রতিবন্ধী।

সারাবাংলা/জেআর/এসআই/এনএস

জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ-২০২১ টপ নিউজ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানল, নিহত ৫
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর