পুরান ঢাকার ‘বরাতি রুটি’
১ মে ২০১৮ ১৮:২৭ | আপডেট: ১ মে ২০১৮ ১৮:৩০
।।সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ শবে বরাত উপলক্ষে পুরান ঢাকায় বরাবরই উৎসবের আমেজ চলে। এদিন সন্ধ্যা নামলেই সবাই পাঞ্জাবি-পাজামা ও টুপি পড়ে দল বেঁধে মসজিদে যান। বাড়িতে আর দোকানে দোকানে চলে হাওয়া-রুটি বানানো আর কেনাবেচার ব্যস্ততা।
মঙ্গলবার ( ১ মে) শবে বরাত উপলক্ষে এবারও পুরান ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাহারী সব রুটির পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা। ঝাল -মসলা, মিষ্টি জাতীয় উপাদান আর মোরোব্বা দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি পুরান ঢাকার বাহারী এসব রুটি ‘বরাতি রুটি’ হিসেবেই পরিচিত।
সকাল থেকেই এখানকার রায়সাহেব বাজার মোড়, চকবাজার, বংশালের আল রাজ্জাক হোটেল, সুত্রাপুর, লক্ষীবাজার, নাজিরাবাজার, নারিন্দা বাজার ও কলতা বাজার এলাকায় বরাতি রুটি ও হালুয়া বেচাকেনার ধুম পড়ে ।
এ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিভিন্ন মাছ ও প্রাণী আকৃতির রুটিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। পুরান ঢাকার মানুষরা হরেক ডিজাইনের এসব রুটি কিনে খান।এছাড়া এসব বরাতি রুটি ছেলে-মেয়েদের শ্বশুরবাড়ি ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠানোর রেওয়াজ চালু আছে এই এলাকায়।
সুত্রাপুরের লোহারপুল মোড়ের ৭০ বছরের বাসিন্দা মোহাম্মদ কায়কোবাদ সারাবাংলাকে বলেন, বহু বছর আগে থেকেই বিশেষভাবে এসব রুটি শবে বরাতে ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন রুটির গায়ে নতুন করে কাচবা পুঁতি বসিয়ে সাজানো হয়। যাকে বলা হয় শবে বরাতের বরাতি রুটি। রুটির সঙ্গে হালুয়া বিক্রি হয় নানারকমের।
তিনি জানান, আগে এসব রুটি সঙ্গে গোটা মুরগি, নানা ধরনের কাবাব ও টানা পরোটা পাওয়া যেতো। আর রুটি-হালুয়া ও মাংসের বিভিন্ন পদ বড় বড় সব ট্রেতে করে পাঠানো হয় প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।
ছেলে বা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতেও রুটি হালুয়াসহ নতুন পোশাক বিভিন্ন রকমের ডালায় সাজিয়ে পাঠানোর রেওয়াজ আছে বলেও জানান পুরান ঢাকার এই বাসিন্দা।
তবে এখানকার রুটি বিক্রেতারা জানান, আগের মতো বেচাকেনা আর হয় না। এখন আর একান্নবর্তী পরিবার বা স্বজনদের বাড়িতে পাঠানোর রেওয়াজ সবাই মানে না । তাছাড়া ঘরে ঘরেই রুটি হালুয়া বানায় সবাই। রুটির বদলে পোলাও, ভুনা খিচুড়ি,কাচ্চি বিরিয়ানিও রান্না করা হয় বলেও জানান এই ব্যবসায়ী।
সারাবাংলা/ইউজে/জেডএফ