দাসপ্রথায় ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইলো নেদারল্যান্ডস
১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:২৬
দাসপ্রথায় ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য ডাচ রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে। দাসপ্রথার কারণে বিরূপ পরিণতি বর্তমান দিনেও অব্যাহত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ডাচ ন্যাশনাল আর্কাইভসে একটি জাতীয় টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেন, ‘আজ আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’ তিনি বলেন, ‘শতাব্দী ধরে ডাচ রাষ্ট্র এবং প্রতিনিধিরা দাসপ্রথাকে সক্রিয় ও উদ্দীপিত করেছে এবং এর থেকে লাভবান হয়েছে। এটা সত্য যে আজ জীবিত কেউই দাসপ্রথার জন্য ব্যক্তিগতভাবে অপরাধী নন। তবে দাসত্বের জন্য বংশধরদের বিপুল যন্ত্রণার দায়ভার ডাচ রাষ্ট্র বহন করে।’
বেশ কয়েক দশক আগে থেকেই দেশের ঔপনিবেশিক অতীতের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠেছিলে নেদারল্যান্ডসে। লুণ্ঠিত শিল্পকর্ম ফিরিয়ে আনা এবং নেদারল্যান্ডসের ক্ষমা চাওয়ার জন্য সাবেক উপনিবেশ দেশগুলোর তরফ থেকেও চাপ আছে।
তবে সাবেক ডাচ উপনিবেশ দেশগুলোর অধিকার সংগঠনের তরফ থেকে নেদারল্যান্ডসের ক্ষমাপ্রার্থনার দিনক্ষণ নিয়ে আপত্তি উঠেছে। তাদের দাবি, নেদারল্যান্ডস তড়িঘড়ি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৩ সালের ১ জুলাই নেদারল্যান্ডসকে ক্ষমাপ্রার্থনার আহ্বান করেছিল তারা। ওই দিন ডাচ রাষ্ট্রে দাস প্রথা বিলুপ্তির ১৬০তম বার্ষিকী। এছাড়া নেদারল্যান্ডসের রাজা যেন ক্ষমাপ্রার্থনা করেন সেই দাবিও জানিয়ে আসছে তারা। তবে সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজার পক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
ডাচ রাষ্ট্রের দাসপ্রথার ইতিহাস ২৫০ বছরের। লেইডেন ইউনিভার্সিটির সমীক্ষা অনুসারে, ১৬১২ থেকে ১৮৭২ সালের মধ্যে ডাচদের হাতে সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ আফ্রিকান নির্যাতিত হয়েছিল। ১৮শ শতকে সুরিনাম এবং গায়ানায় ডাচরা ক্রীতদাস কেনাবেচার বাজার সৃষ্টি করে। ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে ১৭শ শতকে এশিয়ায় দাস ব্যবসা করে ডাচরা।
১৮৬৩ সালে নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রীয়ভাবে দাসপ্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করে। কিন্তু দাস ব্যবসা শেষ হয় আরও ১০ বছর পর।
সারাবাংলা/আইই