Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট, চলছে তল্লাশি

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১৭

ঢাকা: ১০ ডিসেম্বর বিএনপির গণসমাবেশ কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কায় পুলিশ রাজধানীসহ সারাদেশে টহল জোরদার করেছে। এছাড়া ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যেখানে ঢাকার বাইরে থেকে আসা যানাবাহনগুলোতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। এমনকি ঢাকার ভেতরেও একাধিক চেকপোস্ট বসানোর খবর পাওয়া গেছে। সেগুলোতেও চলছে তল্লাশি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকার যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, ডেমরা, মেরাদিয়া বাজার, কুড়িল প্রগতি স্মরণী, আব্দুল্লাহপুর, তুরাগের ধৌড়, গাবতলী, বসিলা ব্রিজ, বাবু বাজার ব্রিজ, তাঁতী বাজার মোড়, সদরঘাটসহ সব প্রবেশ মুখে একাধিক তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের চেকপোস্টও রয়েছে। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, তল্লাশির পাশাপাশি ফোন কেড়ে নিয়েও চেক করা হচ্ছে। কার সঙ্গে কথা বলেছি, কেন ঢাকায় আসছি, কোথায় যাব, কী করি- এগুলো জানতে চাওয়া হচ্ছে। আইডি কার্ড দেখার পরও অনেককে নামিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কাউকে বসিয়ে রাখার পর ছাড়া হচ্ছে, আবার কাউকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

যাত্রীরা বলছেন, শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরের সড়ক ও মহাসড়কগুলোতেও তল্লাশি চলছে। এমনকি আন্তঃজেলার অনেক বাসকে ঢাকায় ঢুকতে না দিযে যাত্রী নামিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো কেরাণীগঞ্জ থেকেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

আহসান উল্লাহ নামে এক যাত্রী সারাবাংলাকে জানান, তিনি কুমিল্লা থেকে ঢাকা মেডিকেলে যাবেন। তার ভাই ভর্তি আছেন সেখানে। কুমিল্লায় সকাল থেকে বসে থেকে অবশেষে একটি মিনি বাসে ওঠেন। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজের কাছে এসে তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাদের তল্লাশি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন মেম্বারকে ফোন করলে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এদিকে, রাজধানীর সড়কগুলো কয়েকশ’ চেকপোস্ট বসিয়েছে ডিএমপি ও র‌্যাব। এমনকি কোনো কোনো সড়কে একাধিক চেকপোস্টও বসানো হয়েছে। এসব চেকপোস্টে রিকশা, ভ্যান, পিকআপ ট্রাক সবকিছুই তল্লাশির আওতায় আনছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া পথচারীদের অভিযোগ, রাজধানীর গেন্ডারিয়া দয়াগঞ্জে মোড়ে পুলিশ চেকপোস্টে আটক করা হয় অন্তত ২০ পথচারীকে। তাদের ফোন কেড়ে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের এক এক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

অন্যদিকে, সদরঘাট এলাকায় সবধরণের লঞ্চ আটকে আছে। যেসব লঞ্চ সকালের দিকে ঢাকায় এসেছে সেগুলোর যাত্রীদের তল্লাশি করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। দিনে আর কোনো লঞ্চ ঢাকায় আসবে বলে জানিয়েছে সেখানকার শ্রমিকরা। তবে ঢাকা থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির গণসমাবেশ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে হবে। নয়াপল্টন থেকে সরে আসায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করতে দিলে পুলিশ কেন চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে? এমন প্রশ্ন তুলেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

ঢাকায় চেকপোস্ট বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে বিশেষ অভিযান চলছে। পলাতক জঙ্গি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও মাদক অপরাধীদের ধরতে এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই চেকপোস্ট নয়। তবে নাশকতাকারীও এই অভিযানের আওতায় আসবে। চেকপোস্টে নাশকতাকারী ধরা পড়লে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’

গত কয়েকদিনের অভিযানে গ্রেফতার বেশিরভাগই বিএনপির নেতাকর্মী কিনা?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মী বেশি। তবে তারা পরোয়ানাভুক্ত আসামি। আর ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে তারা তো অপরাধীই।’

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

চেকপোস্ট তল্লাশি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর