‘নৈতিকতা পুলিশ’ ভেঙে দেবে ইরান
৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৫১ | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৫৪
ঢাকা: ভেঙে দেওয়া হবে ইরানের বিতর্কিত ‘নৈতিকতা পুলিশ‘। রোববার (৪ ডিসেম্বর) আইএসএনএ–কে সূত্র ধরে খবর জানিয়েছে জার্মান সংবাদপত্র ডয়েচেভেলে।
শনিবার রাতে সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ অ্যাটর্নি জেনারেল জাফর মন্তাজারিকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, বিচার বিভাগের সঙ্গে নৈতিকতা পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নৈতিকতা পুলিশ বাহিনী ভেঙে দেওয়া হলেও বিচার বিভাগ অবশ্যই আচরণগত ক্রিয়াকলাপের ওপর নজরদারি চালিয়ে যাবে। শনিবার ধর্ম–ভিত্তিক নীতির রূপরেখার একটি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভেঙে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নতুন ম্যান্ডেটের অধীনে অন্য কোনো স্কোয়াড গঠন করা হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কয়েক মাস আগে ‘নৈতিকতা পুলিশ‘ এর হাতে আটক মাহসা আমিনী নামে এক তরুণীর আটক ও মৃত্যুর পর ইরান কয়েক মাস ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে ইরানে। এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনা–সমালোচনার সৃষ্টি করে।
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বা ভিন্ন নামে এই বাহিনী আবারও স্থাপন করা হবে কিনা তা নিশ্চিত না হলেও রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে ‘নৈতিকতা‘ ভঙ্গের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড এবং আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল এ ঘোষণা দিলেও সেটিতে আস্থা রাখতে পারছে না বিশ্ব সম্প্রদায়। সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক কামরান মতিন ডয়েচেভেলেকেব বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের ঘোষণাটি সতর্কতাভাবে বিচার করতে হবে। নৈতিকতা পুলিশ ইরানের বিচার ব্যবস্থার অংশ না হয়েও তারা তথাকথিত আইন প্রয়োগকারী বাহিনী বা পুলিশ বাহিনীর হয়ে কাজ করে। তাই তাদের ভেঙে দেওয়া হবে কিনা সে ঘোষণা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরই দেওয়ার কথা যা এখনও হয়নি।’
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সঠিকভাবে হেডস্কার্ফ বা হিজাব না পরার কারণে নৈতিকতা পুলিশের কাছে আটকের পর মারা যান বাইশ বছর বয়সী মাহসা আমিনি। যার ফলে নৈতিকতা পুলিশবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে যা কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়। তারপর থেকে যথেষ্ট চাপের মুখে রয়েছে তেহরানের সরকার।
শনিবার মন্তাজেরি আরও বলেন মেয়েদের মাথায় স্কার্ফ পরার বাধ্যবাধকতার কয়েক দশকের পুরনো আইনটি পর্যালোচনা করছে কর্তৃপক্ষ। এটির কোনো ‘পরিবর্তন‘ দরকার কিনা সেটিও ভেবে দেখা হচ্ছে।
নৈতিকতা পুলিশ ইরানের পুলিশ বাহিনীর একটি ইউনিট যাদেরকে ইসলামিক ড্রেস কোড এবং জনসাধারণের অন্যান্য আচরণের জন্য আইন প্রয়োগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কট্টরপন্থী রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আহমাদিনেজাদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তারা ২০০৬ সাল থেকে রাস্তায় টহল দেওয়া শুরু করে।
ইরানের আইন অনুযায়ী, মহিলাদের এবং বয়ঃসন্ধি পরবর্তী মেয়েদের অবশ্যই জনসমক্ষে মাথা ঢাকতে হবে এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচারে নারীদের সীমালঙ্ঘনের জন্য আটক করার অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/আরএফ/একে