উন্নয়ন বোর্ডের দোকান এখন বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট
৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩১ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩৯
বান্দরবান: বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় অসহায় ম্রো জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধান সড়কের পাশে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। পরে তা ম্রো জনগোষ্ঠীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে সেই দোকান ঘর দখল করে তার উপর নির্মাণ করা হচ্ছে বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পাকা ভবনে নিচে ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ করে। পরে তা ম্রো জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে রাংলাই ম্রোকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রাংলাই ম্রো জায়গাসহ ওই ৪টি দোকান বহিরাগতদের কাছে চড়া মূল্যে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এরপর সেই দোকান ঘরের ভবনের উপরেই একটি আধুনিকমানের বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে গড়ে তোলা দোকান ভবনটি দখলে নিয়ে তার উপরেই নির্মাণ করা হচ্ছে রেস্টুরেন্ট। ইতিমধ্যে কাজের ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা মো. ফরিদ জানান, মো. রিপন নামের চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী এ রেস্টুরেন্টটি নির্মাণ করছেন। আর এ কাজের দেখাশুনা করছেন তিনি। ব্যবসায়ী রিপনের সঙ্গে যোগাযোগ করার মুঠোফোনের নম্বর চাইলে ফরিদ বলেন, ‘রিপনের নম্বর দেওয়ার অনুমতি নেই এবং তার সঙ্গে যোগাযোগও করা যাবে না।’ তবে বিষয়টি নিয়ে রাংলাই ম্রোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
ওই এলাকার ম্রো সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে গড়ে তোলা এ ৪টি দোকানের দায়িত্বে ছিলেন রাংলাই ম্রো। তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তার করে দোকানগুলো বহিরাগত ব্যবসায়ীদের দখলে দিয়েছেন। এতে এলাকার ম্রো সম্প্রদায়ের অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এসময় তারা তদন্তপূর্বক সরকারি দোকান দখল ও তার ওপর রেস্টুরেন্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানসহ জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো. ইয়াছির আরাফাত বলেন, ‘কয়েকবছর আগে বোর্ডের অর্থায়নে ৪টি দোকানঘর নির্মাণ করে তা ওই এলাকার একটি সমিতিকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এটি দখলে নিয়ে বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট করার কথা আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাংলাই ম্রোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তিনি দেশের বাহিরে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/এনএস
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান বান্দরবান চিম্বুক সড়ক