সূচে ফোঁড়ে রানা প্লাজায় নিহতদের স্মরণ
২৯ এপ্রিল ২০১৮ ২২:২১ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ২২:২৬
।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর ।।
ঢাকা: রাজধানী ধানমণ্ডির দৃক গ্যালারিতে রানা প্লাজা ধসের ৫ বছর পূর্তিতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘স্মৃতি কাঁথা ও কথা’র দ্বিতীয় প্রদর্শনী। রোববার (২৯ এপ্রিল) গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির পক্ষ থেকে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীর প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘মৃতদের স্মরণ করো জীবিতদের জন্য লড়াই করো’
দৃক গ্যালারির দ্বিতীয় তলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে একটা কাঁথা। পুরাতন শাড়ি আর গামছায় বানানো এই কাঁথার মাঝে সেলাই করে লেখা, ‘চির দিন যেন মনে রাখিতে পারি ২৪ এপ্রিল’, রানা প্লাজা ধসে দিন। দুই পাশে নিখোঁজ দুইজন শ্রমিকের ছবি। কাপড় দিয়ে সেলাই করা। সেলাই করেছেন তাদেরই কোনো স্বজন।
মাঝের ঘরে লম্বা চট বিছানো। চটের বিচ্ছিন্নভাবে উপর ছড়িয়ে আছে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আনা বিভিন্ন জিনিস। একটা মানিব্যাগ, কিছু বোতাম, কাপড়ের ছেঁড়া অংশ, একটা ওড়না। চটের মাঝামাঝি এক জায়গায় রাখা একটা সেলাই মেশিন। এই রকম মেশিনে সেলাই করতে করতেই নয় তলা ভবনের নিচে জীবন্ত কবরে গিয়েছে সেলাই দিদিমণিরা।
চটের একধারে বসে আছেন নিহত একজন শ্রমিকের স্বজন। ৫ বছর সময়ও ভরতে পারেনি তার হৃদয়ের ক্ষত। চটের পাশে একটি টুলের উপর রাখা একটি নীল রুমাল। তার উপরে রাখা একটি চিঠি। নিহত শ্রমিক আল আমিনের পকেট থেকে পাওয়া যায় এই চিঠি। মৃত্যুর মুহূর্তে সে কি ভাবছিল তার প্রিয়তমার কথা?
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্মৃতি কাঁথা ও কথা প্রদর্শনীটি দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হলো। পোশাক শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করা এই প্রদর্শনীর লক্ষ্য। রানা প্লাজা ধসে ১১৭৫ জনের বেশি শ্রমিক প্রাণ হারান। অনেকে এখনও নিখোঁজ আছে। তবুও শাস্তি হয়নি সোহেল রানাসহ অন্য দোষীদের। তারা ক্ষতিপূরণ আইনের বদল ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। বক্তারা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করার দাবিও তুলেন।
এ অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিকল্পনা ও আয়োজন করেছেন যৌথভাবে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার ও আমেরিকান অ্যাকটিভিস্ট, ইতিহাসবিদ এবং কাঁথা শিল্পী রবিন বারসন। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চলবে।
সারাবাংলা/এমএ/এমএইচ
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook