জেলিফিশে অপার সম্ভাবনা
১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৭:২৪ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২ ২১:৩৫
কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আবারও ভেসে আসছে শতশত জেলিফিশ। এ সব জেলিফিশ এখন ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাগর পাড়ের জেলেদের। তারা বলছেন জেলিফিসের কারণে মাছ ধরতে পারছে না। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন এই জেলিফিস একটি সম্ভাবনাময়ী সি-ফুট। যা বিদেশে রফতানি করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বেপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে হিমছড়ি পয়েন্ট পর্যন্ত ভেসে আসছে শতশত জেলিফিশ। আগে তেমনটা দেখা না গেলেও গত ১ মাসে বেশ কয়েকবার ভেসে আসা এ সব জেলিফিশের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় জেলেরা। এসব জেলিফিশ একদিকে আটকা পড়ছে জেলেদের জালে। অন্যদিকে সাগর পাড়ে জেলিফিশের উপস্থিতির কারণে বাকী মাছগুলো মাছ সরে পড়ছে। এতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছেনা কোন মাছ। জেলিফিশের কারণে তাদের পাশাপাশি বিব্রত স্থানীয় ও পর্যটক।
হিমছড়ি এলাকার স্থানীয় জেলে লিয়াকত মিয়া জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্লাস্টিকের ছোট নৌকা করে বরশি অথবা জাল দিয়ে সাগর পাড়ে মাছ ধরছে। সে প্রত্যেকবারই দুই-এক কেজি অথবা তারও বেশি মাছ পেত। কিন্তু গত মাস খানেক ধরে জেলিফিসের কারণে অন্যান্য মাছ সরে গেছে। ফলে তার জালে আর মাছ ধরা পড়ছে না।
আরেক স্থানীয় জেলে সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি জেলিফিসের কারণে সাগর পাড়ে জাল ফেলা যাচ্ছে না। জালে এখন আর মাছ ওঠে না। উঠছে জেলিফিস।
স্থানীয় যুবক নেছার আহম্মদ বলেন, ‘এই ধরনের জেলিফিস আগে দেখা যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এই জেলিফিসের নিরাপত্তায় মৎস্য বিজ্ঞানী বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া উচিত।’
সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা বাপ্পী নামে এক পর্যটক জানান, এই প্রথম সাগরপাড়ে জেলিফিস দেখতে পেয়ে খুবই বিচলিত। হয়ত আমরা তাদের উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারছি না বলে এমনটি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলিফিস দেখতে সমুদ্রপাড়ে পরিদর্শনে যাওয়া বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার জানান, দুই হাজার প্রজাতির জেলিফিসের মধ্যে মাত্র ১১ প্রজাতির জেলিফিস খাবার যোগ্য। তার মধ্যে এই হোয়াইট টাইপ জেলিফিস অন্যতম। যার বিচরণক্ষেত্র রয়েছে বঙ্গোপসাগরে। এই জেলিফিস স্রোতের বিপরীতে সাতার কাটতে পারেনা। ফলে জোয়ারে ভেসে আসা জেলিফিস ভাটার সময় সাগর পাড় এবং জেলেদের জালে আটকা পড়ে। তবে খাওয়ার উপযোগী এই জেলিফিস সর্ম্পকে অনেকের ধারণা নেই। বিশ্ববাজারে চাহিদা সম্পন্ন এই জেলিফিস স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশে রফতানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ করা যাবে।
সারাবাংলা/একে