জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক
১৭ নভেম্বর ২০২২ ১৮:২৮ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ২১:০২
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আগামী জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে আর বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না। এখনও কোনো সংকট নেই, তবে দেশে আন্ডার ইনভয়েসিং (কম মূল্য দেখানো) ঠেকাতে আমরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছি। হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ওভার ইনভয়েসিং (বেশি মূল্য দেখানো) এবং আন্ডার ইনভয়েসিং শূন্যতে নামিয়ে রাখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ নিয়ে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অস্বাভাবিক এলসি খোলা হয়েছিল। এ সময়ে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। আমরা ছয় মাসের হিসেব করে দেখেছি, এগুলো অস্বভাবিক। সেজন্য ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করেছি, যাতে এ ধরনের এলসি খোলা না হয়।’
তিনি বলেন, ‘পুরো অর্থবছরে আমাদের ৮৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়, রফতানি হয় ৫২ বিলিয়ন ডলারের। কিন্ত এর মধ্যেও ওভার ইনভয়েসিং ছিল ২০ থেকে ২০০ শতাংশ। আমাদের পদক্ষেপের কারণে তা অক্টোবর ও নভেম্বরে শুণ্যের কোটায় নেমে এসেছে।’
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘দেশে ওভার ইনভয়েসিংয়ের পাশাপাশি আন্ডার ইনভয়েসিংও শক্তিশালি। এর মাধ্যমে হুন্ডি হয় বেশি। তারপরও সংবাদ মাধ্যমে যেসব তথ্য এসেছে তা আনপ্রেসিডেন্টেড (নজিরবিহীন)। ব্যাংকগুলোকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি তারা যাতে এলসি না খোলে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আর্থিক খাতে আমাদের মনোযোগ বেশি দিতে হয়েছে। এখন আমাদের প্রাইস স্ট্যাবিলিটি ও ফাইনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটিতে নজর দিতে হবে। আমাদের সামগ্রিক চাহিদা কমিয়ে সরবরাহ বাড়াতে হবে। সাধারণত আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে মুদ্রা সরবরাহকে দায়ী করা হয়। মূল্যস্ফীতির কারণ মুদ্রা সরবরাহের কারণে নয়।’
গভর্নর বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির আকার প্রতি বছরই বাড়ছে। মুদ্রা সরবরাহের পরিমাণ জিডিপির ৪১ শতাংশ। যেটা ভারতের ৮০ শতাংশ। আমাদের মুদ্রা সরবরাহ বাড়াতে হবে।’
এ ছাড়া সাম্প্রতিক এলসি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘ইন্টারেস্ট গ্যাপ বাড়ানোর কোনো কারণ দেখছি না। গত তিন যুগের মধ্যে চলতি হিসাবের ঘাটতি সর্বোচ্চ। এর কারণ অস্বাভাবিক হারে এলসি খোলা। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রার মান ধরে রাখতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।’
সারাবাংলা/জেজে/ইআ