কুষ্টিয়ায় পৃথক ২ হত্যা মামলায় ১০ জনের যাবজ্জীবন
১০ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০৫ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ১৬:২৫
কুষ্টিয়া: জেলা সদর ও কুমারখালী থানায় দায়ের করা পৃথক দু’টি হত্যা মামলায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ মোট ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা এলাকার মৃত মঈন উদ্দিন বিশ্বাসের তিন ছেলে আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস (৬০), বাবুল বিশ্বাস (৪৫), হাবিল বিশ্বাস (৫১), আক্তারুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে মাহামুদুল হাসান সবুজ (৩০), একই এলাকার কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৪১), মৃত জলিল গায়েনের ছেলে মাসুদ গায়েন (৩৯), রাজবাড়ী জেলার তেতুলিয়া এলাকার আব্দুল আজিজ মোল্ল্যার ছেলে জিল্লুর রহমান (৩০), একই এলাকার দলিল উদ্দিনের ছেলে তারেক শেখ ওরফে মাধব (৩০), মাহাফুজুর রহমানের ছেলে জাহিদ খাঁ (৩০), সিংড়া এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে সৌরভ মিয়া (৩৬)। রায় ঘোষণার সময় আসামি আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস চেয়াম্যানসহ ছয়জন উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই তাদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল পূর্ব শত্রুার জেরে ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। নিহতের ভাই মাহবুবুল করিম মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। নিহত মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টু দহকুলা গ্রামের সোহরাব উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন।
অপরদিকে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দ চরের ঘাটে অজ্ঞাতনামা জবাইকরা একটি মরদেহ উদ্ধার করে কুমারখালী থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর দিন ১ নভেম্বর কুমারখালী থানা পুলিশের এসআই লিয়াকত আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে ৩১ অক্টোবর ৩০২/৩৪ ধারায় ৪জনকে অভিযুক্ত করে কুমারখালী থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক সিকদার আলী আক্কাস। মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে অভিযুক্তরা রাজবাড়ী জেলার তেতুলিয়া এলাকার হাশেম শেখের ছেলে মিঠু শেখ (২৪)কে কুপিয়ে হত্যা করে।
কুষ্টিয়া কোর্টের সরকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী পৃথক এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘ বিচার কার্য শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে সন্দোহতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দুইটি মামলায় মোট ১০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।