২৫ কেজি সোনা বিক্রি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
৮ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৪৪ | আপডেট: ৮ নভেম্বর ২০২২ ১৮:০৮
ঢাকা: ২৫ কেজি ৩১ গ্রাম (২ হাজার ১৭০ ভরি) সোনা বিক্রি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। নভেম্বরের মধ্যেই এই সোনা বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে যে সোনাগুলো আসে তার অধিকাংশই কাস্টমসের মাধ্যমে জব্দ করা। এসব জব্দ হওয়া সোনার মধ্যে যেগুলোর বিষয়ে কোনো মামলা থাকে না অথবা মামলা নিস্পক্তি করা হয়েছে, সেই সোনাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে বিক্রি করে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ কেজির কিছু বেশি সোনা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি মাসেই এই বিক্রি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’
জানা গেছে, সোনা বেচা-কেনা করার লাইসেন্স রয়েছে এমন ব্যবসায়ীরা কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা বিক্রির নিলামে অংশ নিতে পারবেন। আগামী ১৪ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত আগ্রহী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে দুই হাজার টাকা জমা (অফেরতযোগ্য) দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করে দরপত্র শিডিউল ক্রয় করতে পারবেন। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে অংশ গ্রহণকারীদের প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করে নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্যদের একটি তালিকা করবে। এই পর্যায়ে যেসব সোনার বার, অলঙ্কার, টুকরা বা পাত বিক্রি করা হবে, তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
নিলামে অংশগ্রহণকারীরা নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে উপস্থিত হয়ে সোনা কতটুকু খাঁটি, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একজন স্বর্ণকার বা পরীক্ষক যেতে পারবেন। এই প্রদর্শনের তৃতীয় কর্ম দিবসে দরপত্র জমা দিতে হবে। সঙ্গে দরপত্রে উদ্ধৃত মূল্যের আড়াই শতাংশ অর্থ বায়না বা নিরাপত্তা জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে সোনা কেনার কার্যাদেশ দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সব টাকা জমা দিতে হবে। টাকা পরিশোধ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সোনা নিতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক দর-দাতা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জামানত বাজেয়াপ্ত ও প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারবে বলেও জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নিলামে বিক্রি করা এসব সোনা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে দেশে আসা বা চোরাচালানের সময় জব্দ করা হয়েছে। বিশেষ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধ বা চোরাচালানের সোনা জব্দ করে। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে জব্দ করা সোনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখা হয়। মামলার রায় সরকারের পক্ষে হলে জব্দ সোনা নিলামে বিক্রি করা হয়।
জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি আর স্থায়ী খাতে রয়েছে ১৫৯ কেজি সোনা। এখন স্থায়ী খাত থেকে ২৫ কেজি সোনা নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী নিলামে অংশ নিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সনদ, মূসক নিবন্ধন, বিআইএন সনদ, সোনা ক্রয়, মজুত ও সরবরাহের লাইসেন্স, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদ, আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সনদ, আয়কর পরিশোধের হালনাগাদ সনদ, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি হলে কোম্পানির নিবন্ধন সনদ, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন ও পরিচালকদের হালনাগাদ তালিকা জমা দিতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/ইআ