বিএনপিকে রাজনৈতিক ভাষায় ফিরে আসার অনুরোধ নানকের
৫ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৩৪
ঢাকা: বিএনপিকে সমাবেশের নামে লাঠি নিয়ে লাঠি মিছিল বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, রাজনীতিতে একটি শিষ্ঠাচার রয়েছে। রাজনীতিতে একটি গতানুগতিক প্রথা রয়েছে। বিএনপি নামক দলটি কিন্তু সেই রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূতভাবে কথা বলেন। অশালীন কথা বলেন। বিএনপিকে অনুরোধ করবো, রাজনৈতিক যে ভাষা রয়েছে সেই ভাষায় ফিরে আসার জন্য।
শনিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়কসহ সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নানক বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার পরিষ্কার নির্দেশনা হলো, কোনো আন্দোলন সংগ্রামে শুধু বিএনপি না, কারো কোনো আন্দোলন সংগ্রামে বাধা দেওয়া যাবে না।’
‘যার যার কর্মসূচি পালন করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় পরিবহন বন্ধ হচ্ছে, বাস ও ট্রাক বন্ধ হচ্ছে। এই বাস-ট্রাক বন্ধ হচ্ছে একটি কারণে। কিন্তু এটি সরকারের তরফ থেকে কোন নির্দেশনা দিয়ে করা হচ্ছে না। এটি বাস-ট্রাক মালিক সমিতি বন্ধ করে দেয়। কারণ তারা আতঙ্কিত। তারা দেখেছে, বিএনপি-জামায়াত বাসে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। যাত্রীসহ বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। কাজেই যে মালিক বাসটি চালাবেন, তার তো অনেক টাকার ইনভলমেন্ট আছে। এতো টাকার সঙ্গে যে বাসের সম্পৃক্ততা আছে সে বাস জ্বলে যেতে পারে, জ্বালিয়ে দেওয়া হতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই তারা বাস পরিবহন বন্ধ রাখছে।’
বিএনপির সমাবেশ করাকে স্বাগত জানিয়ে নানক বলেন, ‘আমরা স্বাগত জানাই কিন্তু আমরা একটি কথা বলতে চাই যে, বিএনপিকে মনে রাখতে হবে কোনভাবেই কোন সন্ত্রাস যদি অগ্নিসন্ত্রাস করে, লাঠি নিয়ে মিছিল করে এই লাঠি মিছিল বন্ধ করতে হবে। কারণ রাজনীতিতে একটি শিষ্ঠাচার রয়েছে। রাজনীতিতে একটি গতানুগতিক প্রথা রয়েছে। বিএনপি নামক দলটি কিন্তু সেই রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূতভাবে কথা বলেন। অশালীন কথা বলেন। সে কারণে আমি অনুরোধ করবো বিএনপিকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ফিরে আসার জন্য, রাজনৈতিক যে ভাষা রয়েছে সেই ভাষায় ফিরে আসার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে মাঠটিতে দাঁড়িয়ে আছি সেটি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এই ঐতিহাসিক মাঠেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের মাস সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। এ উপলক্ষ্যে আগামী ১১ নভেম্বর এই মাঠে যুব মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ লক্ষাধিক যুবক এই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের সভাপতি এরইমধ্যে কয়েকটি সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। আগামী ২৬ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সর্ব বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৯ ডিসেম্বর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পরে ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যুবলীগের মহাসমাবেশ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ চঞ্চলতা, আনন্দ-উদ্দীপনা, উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে, কর্মযজ্ঞ চলছে এবং আমাদের কর্মযজ্ঞ চলছে।’
ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে বয়সসীমা বাড়ানোর ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে কি না এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, ‘এই বিষয়টি নেত্রীর চিন্তার মধ্যে আছেন। এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ২৪ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩ ডিসেম্বর, ২৬ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগ এবং ৯ ডিসেম্বর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে। আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুবলীগের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে আগামী ১১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এবার একই মূল মঞ্চে সকল সম্মেলন ও যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শুধুমাত্র স্ব স্ব দল ও সংগঠনগুলো মঞ্চের বাহ্যিক সজ্জা পরিবর্তন করে নিজেদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত করবে।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ