২ দিনেও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ পরিস্থিতি
২৬ অক্টোবর ২০২২ ২০:৫৯
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিতরণ সংস্থাগুলো বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের রাতে তার ছিঁড়ে, খুঁটি উপড়ে এবং সাব স্টেশনগুলোতে পানি ঢোকার কারণে প্রায় ৯৪ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও ওইসব গ্রাহকদের কাছে এখনও পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি। সূত্র বলছে, বুধবার (২৬ অক্টোবর) ৮০ লাখের মতো গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখনও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ ফেরেনি।
এর আগে মঙ্গলবার ( ২৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন থাকা সকল গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। সে লক্ষ্যে বিতরণ সংস্থাগুলোর কর্মীরা দিন রাত কাজ করছেন বলেও জানিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়ছে পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা। শুধুমাত্র ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা পুরোটাই বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সেখানকার স্থানীয় ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। বিশেষ করে মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের লোকসান গুনতে হয়েছে অনেক।
আরইবি’র কর্মকর্তারা জানান, সেখানের বেশিরভাগ গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এখন কিছু দুর্গম চরাঞ্চল বাকি আছে, সেগুলোর কাজ চলছে। দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর আট উপজেলার ছয়টিতে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। সেগুলোতেও বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করেছে। নোয়াখালীতেও বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করেছে। তবে এখনো সেখানে শতভাগ কাজ শেষ হয়নি।
জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতায় ৭২ লাখ, ওয়েস্ট হোম পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় ৬০ হাজার গ্রাহককে বুধবার দুপুর পর্যন্ত সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দীন বলেন, ‘যেটুকু সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে তা দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।’
উল্লেখ্য, দেশে বাংলাদেশ যে সংখ্যক বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে সিংহভাগই পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি)। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে আরইবির গ্রাহকরা। বিভিন্ন স্থানে আটশোর বেশি পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। আর বরিশাল বিভাগের ছয়টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১ হাজার ৭১৪টি মিটার নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ঝড়ের রাতে ৮০ লাখের বেশী আরইবির গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বলে আরইবি সুত্রে জানা গেছে। যেগুলোতে এখনও সংযোগ দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে আরইবির কর্মীরা।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম