ঢাকা দক্ষিণ আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুনকে কারণ দর্শানো নোটিশ
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৩১
ঢাকা: কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ঢাকার লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মারামারির ঘটনা ও কেন্দ্রীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশে দফতর থেকে এই কারণে দর্শানোর চিঠি হুমায়ুন কবিরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হুমায়ুন কবির তিনি নিজেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে শোকজের নোটিশ গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার লালবাগ থানা আওয়ামী লীগ এবং ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অন্তত কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটে। সম্মেলনের শুরুতে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের সমর্থকদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে মারামারি শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দ্বিতীয় দফায় হাজী সেলিম সমর্থকদের সঙ্গে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের সমর্থকদের মারামারির ঘটনা হয়। সম্মেলন শুরু হলে আবার মারামারিতে জড়ায় হাজী সেলিমের সমর্থক, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সমর্থক এবং সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সমর্থকরা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের এমন হাতাহাতি ও বিশৃঙ্খলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই সম্মেলনের মাঠে আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন হাসিবুর রহমান মানিক ও হুমায়ুন কবির সমর্থকরা। এ পরিস্থিতে রাজ্জাক বলে ওঠেন, ‘মারামারি থামানোর জন্য আহ্বান করছি। বিশৃঙ্খলা করবেন না, বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থামুন আপনারা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপনাদের মাঝে এসেছে, এর গুরুত্ব উপলব্ধি করুন আপনারা। আবারও আহ্বান করছি থামুন।’
মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা মঞ্চ থেকে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সম্মেলনে মারামারির শঙ্কা ছিল জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্যে বলেন, “মির্জা আজম আমাকে বলেছে, আজকে মিটিং করা সম্ভব হবে না। আমি বলেছি, ওই মাঠে যাব এবং বক্তৃতা করব।’
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “লাফালাফি, বাড়াবাড়ি করবেন না। নির্বাচনের ১৪ মাস বাকি, অথচ শোডাউন দিয়ে শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছেন! আপনারা কেউ এমপি হতে পারবেন না, নেতা হতে পারবেন না।’
সেদিন সম্মেলন মঞ্চে সঞ্চালনা ও বক্তব্য রাখতে গিয়েও তর্কে জড়ান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
লালবাগের নবাবগঞ্জ পার্কে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আইন সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে