রিজার্ভ এখন ৩৭ বিলিয়ন ডলার
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:১৭ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৩৯
ঢাকা: আমদানিতে ও বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ, রেমিট্যান্স ও রফতানি বৃদ্ধির নানা উদ্যোগ, সরকারের বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছ্রসাধনের পরও কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এটি ২০২০ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর রিজার্ভের সর্বনিম্ন অবস্থান। ওইদিন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেশগুলোর জুলাই-আগস্ট সময়ের জন্য এক দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ ৩৭ দশমিক ১৩ বিলিয়নে নেমে আসে। তবে দুইদিনে তা আরও কমে বুধবার ৩৬ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। সর্বশেষ ১৩ মাসে রিজার্ভ কমেছে ১১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগে, ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
এ ব্যাপারে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান আমাদের যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে পাঁচ মাসের বেশি আমদানি বিল পরিশোধ করা সম্ভব। করোনা পরবর্তী বিশ্বে আমদানি-রফতানি বেড়েছে। এছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। তবে এটা অস্বাভাবিক নয়। এ নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণত কোনো দেশের তিন মাসের আমদানি বিল পরিশোধের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকলে তা আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। আমাদের বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েঝে তা দিয়ে সাড়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার নানা উদ্যোগের কারণে আমদানি কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি রফতানি ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বেড়েছে। সেইসঙ্গে বিদেশে জনশক্তি রফতানি বাড়ছে। ফলে রিজার্ভ সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’
জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চে করোনার পরবর্তী সময়ে আমদানি কমতে থাকায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে থাকে। ২০২০ সালের ৩ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে ৩৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। এর আগে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন রিজার্ভ ৩১ থেকে ৩২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে।
২০২০ সালের জুনের পর ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়তে থাকে। এভাবে বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার উন্নীত হয়। এরপর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করে। গত ১২ জুলাই রিজার্ভ কমে ৩৯ দশমিক ৮০ বা ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। সর্বশেষ দেড় মাসে (এক মাস ৯ দিনে) রিজার্ভ কমেছে ৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। আর সর্বশেষ ১৩ মসে রিজার্ভ কমেছে ১১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম