Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুহিবুল্লাহ খুনের আসামি কারাবন্দি ‘আরসা নেতা’র মৃত্যু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৪৩ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৫৩

মৌলভী জকোরিয়া

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার এক আসামি কারাবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। মৌলভী জকোরিয়া নামে ওই আসামি রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রিপাবলিকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জকোরিয়ার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইমরান।

বিজ্ঞাপন

মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মৌলভী জকোরিয়া (৫৩) কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ (পশ্চিম) এ থাকতেন। মুহিবুল্লাকে হত্যার পর গ্রেফতার হয়ে তিনি কক্সবাজার কারাগারে ছিলেন।

চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইমরান সারাবাংলাকে বলেন, ‘জকোরিয়া ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। অসুস্থ হওয়ায় তাকে আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। গত শুক্রবার রাতে সেখানে মারা গেছেন তিনি। এরপর আমরা আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ হস্তান্তর করেছি।’

২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার ১-ইস্ট লম্বাশিয়া ক্যাম্পে ৪৮ বছর বয়সী রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি ছিলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ নামের রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মুহিবুল্লাহ উখিয়ার ১-ইস্ট লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৭ ব্লকে থাকতেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি। জেনিভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায়ও রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি।

মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীদের দাবি ছিল, দেশে ফেরার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন তিনি। এই স্বপ্নই তার কাল হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যেই একটা অংশ দেশে ফিরতে চায় না। আরসার সদস্যরা তাকে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করে আসছিল তার পরিবার।

মুহিবুল্লার ভাই হাবিবুল্লাহ ওই হত্যাকাণ্ডের পর উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। হাবিবুল্লাহর দাবি ছিল, খুনিদের ১৫ থেকে ২০ জনের দলের প্রত্যেকের মুখ মাস্ক এবং গামছায় ঢাকা ছিল।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মুহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, নয় ছেলেমেয়ে এবং এক মেয়ের জামাইসহ ১১ জন ২০২২ সালের ১ এপ্রিল কানাডায় চলে যান। তাদের ‘রিফিউজি’ মর্যাদা দিয়ে কানাডায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের ১৩ জুন মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মৌলভী জকোরিয়া ছিলেন এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১৪ নম্বর আসামি। আসামিদের মধ্যে ১৫ জন কারাগারে ছিলেন এবং বাকি ১৪ জন পলাতক। গ্রেফতার ১৫ জনের মধ্যে চারজন তদন্ত চলাকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন, যার মধ্যে মৌলভী জকোরিয়া একজন।

গত ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

টপ নিউজ মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ

বিজ্ঞাপন

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানল, নিহত ৫
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর