নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন: মনোনয়ন দৌড়ে আ.লীগের ৭ নেতা
৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪৪ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪৭
নারায়ণগঞ্জ: আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে মনোনয়ন যুদ্ধ। চেয়ারম্যান পদের জন্য দলীয় মনোনয়ন চাইছেন আওয়ামী লীগের সাত নেতা। মনোনয়ন পেতে দৌড়-ঝাঁপও করছেন তারা। ইতোমধ্যে নিজ নিজ সমর্থন আদায়ের জন্য ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে জেলার সর্বত্র বইতে শুরু করেছে নির্বাচনি হাওয়া। জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন কে?- এ নিয়ে সর্বত্র চলছে গুঞ্জন। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্র সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের যে সাত নেতার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে তারা এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ অবশ্য ঢাকার ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী সাতজন হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ভুঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু এবং জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় জানা যাবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে কে হচ্ছেন দলের প্রার্থী। তবে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীরা সবাই আশাবাদী। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, জেলা বিভিন্ন উপজেলা, বিভিন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ৬১৫ জন জনপ্রতিনিধি অংশ নেবেন।
সাতজন প্রার্থীর মধ্যে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমান প্রশাসক। আবদুল হাই ভুঁইয়া ছিলেন এর আগের প্রশাসক। আবদুল হাই ভুঁইয়া ২০১১ সালে জেলা পরিষদের প্রশাসক হয়ে কাজ করেছেন। মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ২০১৬ সালে দলের মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন। এখন প্রশাসক হিসেবে কাজ করছেন। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদী। কারণ গত পাঁচ বছর জেলার পাঁচটি উপজেলায় কাজ করেছি। এই সময়ে আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছি। তাই নেত্রী আমাকেই সুযোগ দেবেন বলে আশা করছি।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ভুঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার নেত্রী আমাকেই মূল্যায়ন করবেন বলে আমি আশা করছি।’ আর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল বলেন, ‘দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছি। জমা দেবো। দল থেকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব।’
এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা সারাবাংলাকে বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীরা আমার জন্য দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছে। এটা তাদের দাবি ছিল। আমি শুধু সই করে দিয়েছি। নেত্রী মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।’ আর আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল বলেন, ‘দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। সবকিছুই নির্ভর করছে নেত্রীর ওপর।’
এছাড়া, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রার্থীদের মধ্যে আমি বয়োজেষ্ঠ্য এবং মুক্তিযোদ্ধা। আমি ব্যাটল ফিল্ডে যুদ্ধ করেছি। তবে যারা প্রার্থী হতে চাইছেন সবাই যোগ্য। সবকিছু নির্ভর করছে নেত্রীর ওপর। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন আমি তার জন্যই কাজ করব।’ দুঃসময়ে দলের সঙ্গে কাজ করার কথা উল্লেখ করে জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার বলেন, ‘দুঃসময়ে দলের জন্য রাজনীতি করেছি। আশা করছি নেত্রী মূল্যায়ন করবেন।’
প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ অক্টোবর হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন। গত ২৩ আগস্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
সারাবাংলা/পিটিএম