গুলি-মর্টারশেলের শব্দে তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক, সর্তক বিজিবি
১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:২৮ | আপডেট: ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৩৮
বান্দরবান সীমান্ত থেকে ফিরে: ‘আমরা এখানে খুব ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। প্রতিদিন আমাদের মাথার উপর দিয়ে গুলি বর্ষণ হচ্ছে। আমরা যেন গুলির নিচে অবস্থান করছি। এই দেখেন এখনো আমার হাতে মর্টারশেলের ভাঙা অংশ রয়েছে।’ এসব বলে পলিথিনের ব্যগ থেকে বিস্ফোরিত মর্টারশেলের ভাঙা অংশ বরে দেখান নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী তুমব্রু গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম (২২)।
সরেজমিনে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ভরপুরের তুমব্রু গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সেনাবাহিনীর বারবার মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গ্রামবাসী। বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে তাদের ঘরবাড়ি। আকাশ-সীমায় চক্কর দিচ্ছে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার।
এদিকে গত রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল উড়ে আসার পর সেই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে তাদের ঘুম আসে না। আতঙ্কিত এই গ্রামবাসী ভয়হীন এক স্বাভাবিক জীবন প্রত্যাশা করছেন।
তুমব্রু গ্রামের জাহিদ হোসেন জানান, ‘তারা যেন যুদ্ধের মধ্যে রয়েছেন। প্রায়ই তাদের গ্রামের উপর দিয়ে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার যায়। গোলাবারুদের শব্দে বাচ্চারা আঁতকে উঠে। মাঝে মধ্যে সীমানার কাঁটাতারের ওপর পাশে মিয়ানমারে অস্ত্রধারী লোকজনকে দেখা যায়। কদিন আগেও তুমব্রু উত্তর পাড়ায় ২টা মর্টারশেল পাওয়া গেছে। যেগুলো মিয়ানমার থেকে এসে পড়েছে। এতে কারও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পরে বাংলাদেশের সেনারা এসব ধ্বংস করে। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তাটা কোথায়? এই বোমাগুলোত বিস্ফোরিত হতে পারত?’
আরেক গৃহবধু সাদিয়া বেগম জানান, ‘প্রতিদিন এখানে বোম আর গুলির শব্দে আমাদের সন্তানেরা ভয়ে থাকে। ঘরের লোকজন আতঙ্কে কাজে যেতে চায় না। মনে হয় এই বুঝি মাথার উপর বোম পড়ল। পার্শ্ববর্তী দেশের এমন আচরণে আতঙ্কে থাকতে চাই না। আমরা এর সমাধান চাই।’
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ চৌধুরী জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও বলছেন, মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী ও মিয়ানমার বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে। দিনে ২৫ থেকে ৪০টি মর্টারশের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে সীমান্তবর্তী লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার রয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারে এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। গোলাগুলি-মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মিয়ানমারের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস