প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই: মির্জা ফখরুল
৩১ আগস্ট ২০২২ ১৮:৩২
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে আয়োজিত এক মিলাদ-মাহফিলে ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়া ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নার আশু রোগমুক্তি কামনায় জাতীয়তাবাদী যুবদল এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া তার ন্যুনতম চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তার চিকিৎসকরা বার বার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, বিদেশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা হওয়া দরকার।’
‘কিন্তু দুর্ভাগ্য এই জাতির যে, এমন একজন অনির্বাচিত অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন—যার মধ্যে ন্যুনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার পর্যন্ত নেই। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে গতকাল যে সমস্ত উক্তি করেছেন—আমরা তা ভাবতেও পারি না, কল্পনাও করতে পারি না। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটায় অবৈধভাবেও বসে থাকলেও এভাবে উক্তি কেউ করতে পারে না। এটা সমস্ত রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘এর একটাই কারণ—রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। প্রতিমুহূর্তে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তিনি হিংসা করেন এবং তাকে সহ্য করতে পারেন না। যে কারণে আজকে তার সম্পর্কে এই সমস্ত শিষ্টাচার বিবর্জিত কথা বলে, যা এদেশের মানুষ কখনো ভালো চোখে দেখে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো শেষ হয়েছে বিধায় বোর্ড বাসায় যেতে সুপারিশ করেছে। বিকালে তিনি ছাড়পত্র পেয়ে বাসায় যাবেন।’
জনগণকে সরকার জিম্মি করে রেখেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যেভাবে দৈনন্দিন জিনিসপত্র চাল-ডাল-তেলের দাম বাড়ছে, যেভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, যেভাবে ন্যায় বিচার ভুলন্ঠিত হচ্ছে, তাতে একেবারেই বলা যেতে পারে যে, দেশের মানুষকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। সরকার আমাদের দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরা (সরকার) কত বড় মিথ্যাবাদী। এরা দেশের সন্মানকে ভুলন্ঠিত করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কিছুদিন আগে এখানে এসেছিলেন। তিনি সরকারকে বলেছেন, মন্ত্রীদের বলেছেন, সুশীল সমাজকে বলেছেন, সমগ্র দেশকে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, এই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এদেশে গুম হয়েছে, এগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি এটাও বলেছেন যে, একটা স্বাধীন, সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন যাতে জাতিসংঘ সাহায্য করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরো বলেছেন যে, সেনাবাহিনীর উচিত হবে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যেন তারা কোনো মতে জড়িত না থাকেন।’
‘অথচ তারা (সরকার) কী বলেছেন? হাইকমিশনার জাতিসংঘে ফিরে যাওয়ার পরে আমাদের এখানে যারা মন্ত্রী আছেন তারা প্রচার করছেন যে, জাতিসংঘের হাইকমিশনার নাকি মানবাধিকার নিয়ে কোনো কথাই বলেননি, এখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি খুব ভালো। তিনি নাকি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। আজকে সেই হাইকমিশনারের অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে, সরকারের মন্ত্রী সব মিথ্যা কথা বলেছেন এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অবশ্যই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/আইই