চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ
২৭ আগস্ট ২০২২ ১৯:৩৯ | আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২২ ২১:২২
ঢাকা: চা বাগান শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রেশনসহ সব সুযোগ-সুবিধা মিলে দৈনিক প্রায় ৫০০টাকা পাবেন তারা।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকপক্ষের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
চা বাগান মালিকপক্ষের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহ আলম। বৈঠকের শুরুতে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘চা শ্রমিকদের আশা, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে মালিকদের সঙ্গে কথা বলে মজুরি বাড়াবেন। সেটাই তিনি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল থেকে সবাইকে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’ তিনি শিগগিরই চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ১৭০ টাকা দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এখানে ব্যাখ্যা করা দরকার, চা শিল্পে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়। যেটা মালিকরা বহন করে। সেক্ষেত্রে যেটা আনুপাতিক হারে বেড়ে যাবে, যেমন নগদ মজুরি ১৭০ টাকার সঙ্গে বোনাস আনুপাতিক হারে বাড়বে। বার্ষিক ছুটি, বেতনসহ উৎসব ছুটি আনুপাতিক হারে বাড়বে।’
তিনি জানান, অসুস্থতাজনিত ছুটি সেটাও বাড়বে আনুপাতিক হারে। ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা, কাজে অনুপস্থিতি অনুযায়ী বার্ষিক উৎসব ভাতা সেটাও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
মুখ্য সচিব বলেন, ‘মালিকরা ভর্তুকি মূল্যে রেশন দেয়, যেটা ২৮ টাকা দিয়ে কিনে দুই টাকায় দেওয়া হয় শ্রমিকদের। এছাড়া চিকিৎসা সুবিধা, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন, চা শ্রমিক পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ, গরু চরানো চৌকিদার ব্যয় এবং বিনামূল্যে বসতবাড়ি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ শ্রমিক কল্যাণ কর্মসূচি, বাসাবাড়িতে উৎপাদন প্রবৃত্তি বাবদ আয় রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে যেটা পড়ে, সেটার হিসাব তাৎক্ষণিক করতে পারেনি। তবে দেখা যাচ্ছে সেটা হয়তো সাড়ে চারশ থেকে ৫০০ টাকা দৈনিক পড়বে।’
এদিকে, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে টানা ১৯ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল চা বাগানের শ্রমিকরা। বার বার মালিকপক্ষ-শ্রমিক আর প্রশাসনের বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা হবে বলে আশাবাদী আন্দোলনকারীরা।
দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দেশের ২৪১ চা বাগানে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। গত ৯ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরেন। আরেক অংশ এখনও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে, চা শ্রমিকদের টানা ধর্মঘটে সারাদেশের বাগান থেকে চা-পাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা শিল্প।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম